শান্তনু নস্কর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুন্দরবনে বাঘের হামলায় মৃত্যু হল মৎস্যজীবীর। মৃতের নাম শীদাম হালদার, বয়স ৪৫ বছর। কুলতলির গোপালগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের গায়েনের চকের বাসিন্দা ছিলেন তিনি।


কী জানা গেল?
স্থানীয় সূত্রে খবর, গোপালগঞ্জ গ্রাম থেকে ৪ জন মৎসজীবীর দল গত বুধবার সুন্দরবনের নদীতে মাছ ও কাঁকরা ধরতে গিয়েছিলেন। তার পর, সোমবার সকালে শীদামের মৃত্যুর খবর আসে। জানা যায়, বাঘের হামলাতেই মারা গিয়েছেন তিনি। খবর গ্রামে আসতেই কান্নার ভেঙে পড়ে মৎস্যজীবীর পরিবার। গ্রামের অন্যান্য মৎস্যজীবী ও বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী নৌকা নিয়ে শীদামের দেহ জঙ্গল থেকে উদ্ধারের জন্য সকালেই রওনা দেন। দিনসাতেক আগে, কার্যত একই ভাবে মারা গিয়েছিলেন আর এক মৎস্যজীবী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন কোস্টাল থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।


বাঘের হানায় আগেও মৃত্যু...
ওই এলাকায় ভাইজুরি খালের কাছে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মারা যান এক মৎস্যজীবী। মৃতের নাম দীপক মন্ডল, বয়স ৫৮ বছর। স্থানীয় সূত্রে খবর ১ ফেব্রুয়ারি কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের মৃধাঘেরি এলাকা থেকে চারজন মৎস্যজীবি মাছ ধরতে সুন্দরবনের জঙ্গলে যান। তাঁরা ভাইজুরি খালের কাছে মাছ ধরছিলেন, সেই সময়েই হঠাৎ হানা দেয় বাঘ। লাগোয়া জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে মৎস্যজীবীর নৌকার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। সেই সময়েই নৌকায় থাকা দীপক মণ্ডলের ঘাড়ে কামড় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বাঘ। সঙ্গে সঙ্গে বাধা দেন সঙ্গীরা। নৌকার হাল নিয়ে তড়িঘড়ি হামলায় দীপককে ছেড়ে দেয় বাঘ। শিকার ফেলেই জঙ্গলে ঢুকে যায় বাঘটি। গুরুতর জখম দীপক মণ্ডলকে নৌকায় ফিরিয়ে আনার সময় পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। এমন ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। সুন্দরবনে বাঘ-মানুষ সংঘাত বহু পুরনো। একদিকে ক্রমবর্ধমান জনবসতি, অন্যদিকে জঙ্গল এলাকায় ঢুকে মাছ ধরা, মধু সংগ্রহের মতো কাজের জন্য বারবার বাঘের মুখোমুখি হতে হয় সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের। কখনও ফেন্সিং কেটে বা কাটা ফেন্সিংয়ের ফাঁক গলে জনবসতিতে চলে আসে বাঘ। শিকার হয় গৃহপালিত পশু। কখনও আবার মাছ ধরতে গিয়ে বা মধু সংগ্রহে গিয়ে বাঘের শিকার হন সাধারণ বাসিন্দারা। 


আরও পড়ুন:এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরেই সন্দেশখালির আরেক 'ত্রাস', শিবু হাজরার প্রপার্টিতেই পুলিশের প্রহরা !