কলকাতা: রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিতে এবার সরব হলেন কলকাতা হাইকোর্টের পদত্যাগী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এমন দাবি জানালেন। তাঁর মতে, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া দরকার। শুধু তাই নয়, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে অবাধে ভোটগ্রহণ হলে, তৃণমূল মুছে যেতে পারে বলেও দাবি করলেন তিনি। (Abhijit Ganguly)


কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সম্প্রতিই হাতে পদ্মপতাকা তুলে নিয়েছেন অভিজিৎ। তার পর থেকেই লাগাতার তৃণমূলকে আক্রমণ করে চলেছেন তিনি। এবার সরাসরি বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুললেন তিনি। বাংলায় আইনশৃঙ্খলা নেই, সাংবাদিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে দাবি করলেন। এভাবে চলতে পারে না, ৩৫৬ ধারা জারি হওয়া উচিত বলে মন তাঁর। (Abhijit Ganguly on TMC)


সন্দেশখালি প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন অভিজিৎ। তিনি বলেন,"সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করছে পুলিশ। উপর মহলের নির্দেশেই হচ্ছে। হেনস্থা করা হচ্ছে সাংবাদিকদেরও। এটাকে আইনশৃঙ্খলা বলে? সাধারণ মানুষের রোষ সামলাতে পারছে না, সাংবাদিকরা তুলে ধরায় হেনস্থা করা হচ্ছে। চূড়ান্ত অগণতান্ত্রিক অবস্থা। ৩৫৬ ধারা জারি করা উচিত।"


আরও পড়ুন: Kunar Hembram Quits BJP: ফের ধাক্কা পদ্মশিবিরে ! এবার বিজেপি ছাড়লেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম


সন্দেশখালির ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অভিজিৎ। তিনি বলেন, "সন্দেশখালিতে কী হল? মা-বোনেদের উপর অত্যাচার হল। মুখ্যমন্ত্রী একদিনও যাননি। যিনি এলাকার সাংসদ যাননি তিনিও, বরং গান-বাজনা করছিলেন।"


সরাসরি নাম না করলেও, অভিজিৎ এখানে বসিরহাটের সাংসদ নুসরত জাহানকেই নিশানা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগেও, সন্দেশখালি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন নুসরত। সন্দেশখালিতে অশান্তি চরমে পৌঁছলেও, তিনি ইনস্টাগ্রামে রিল পোস্ট করতে ব্যস্ত থেকেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও নুসরত জানান, আইনি নিষেধাজ্ঞা এবং দলীয় নির্দেশের জেরেই সন্দেশখালি যাওয়া থেকে বিরত থেকেছেন তিনি।


সদ্য BJP-তে গিয়েছেন বটে, তবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের ফলাফল নিয়ে আশাবাদী অভিজিৎ। তাঁর বক্তব্য, "আমার ধারণা, নির্বাচন যদি অবাধ হয়, যদি ছাপ্পা ভোট আটকানো যায়, তাহলে অসম্ভব ভাল ফল করবে BJP. এমনকি মুছেও যেতে পারে তৃণমূল।"


যদি এই মন্তব্য নিয়ে অভিজিৎকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর কথায়, "বিচারপতির আসন ছাড়ার দু'দিনের মধ্যে যিনি একটা রাজনৈতিক দলের হয়ে গলা ফাটাতে পারেন...সামগ্রিক ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশে কথাগুলি বলেছেন। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কিছু নিয়ম আছে। উনি তো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। উনি জানেন না কী সেই আইন? শুভেন্দু অধিকারীর মতো একসুরে কথা বলছেন। চেষ্টা করে দেখুন না! নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতে না দেওয়ার চেষ্টা বিচারপতির আসনে বসেই উনি করেছেন। নিরপেক্ষতা দেখাননি। একটি দলের হয়ে কাজ করছিলেন যে, তা আজকে প্রতিষ্ঠিত।"