সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: পার্সেল বিস্ফোরণ-কাণ্ডে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার লক্ষণ নেই হেমতাবাদে (Hemtabad Parcel Blast)। বরং শনিবার এলাকায় বন্‌ধের ডাক দিয়েছে হেমতাবাদ ব্যবসায়ী সমিতি। তার জেরে সেখানকার বাজার দোকান সব বন্ধ সকাল থেকে। অভিযুত্করা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত বন্‌ধ চলবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে শান্তিপূর্ণ ভাবে বন্‌ধ চললেও, পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন এলাকাবাসী। অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে বাহারাইল বাজার এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।


শুক্রবার বিস্ফোরণের পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে চললেও, এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তবে যে টোটোয় চাপিয়ে পার্সেল আনা হয়েছিল, সেটিকে ইতিমধ্যেই শনাক্ত করা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি যাতে তেতে না ওঠে, তার জন্য এলাকায় টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে পুলিশের দলও। কিন্তু লোকালয়ের মধ্যে, দিনের বেলা এমন ভয়াবহ ঘটনার রেশ কাটছে না। পুলিশ-প্রশাসনের উপর যেমন ক্ষুব্ধ মানুষ, তেমনই অনলাইন মাধ্যমে কেনা পার্সেল নিতেও ভয় পাচ্ছেন এলাকাবাসী।


শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur News) ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত (India-Bangladesh Border) সংলগ্ন হেমতাবাদে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে। গতকাল বিকেলে সেখানে ওষুধ ব্যবসায়ী বাবলু চৌধুরীর নামে দোকানে একটি পার্সেল রেখে যান এক টোটোচালক (Toto Driver)। পার্সেল নামিয়ে রেখে তৎক্ষণাৎ কার্যত উধাও হয়ে যান তিনি। সেই পার্সেলটি ঘুলতেই তীব্র শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। তাতে গুরুতর জখম হন বাবলু-সহ দোকানে উপস্থিত চার জন। এর মধ্যে তিন জনকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে হাসপাতালে ভর্তি করেত হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া পেয়ে যান অন্য জন।


আরও পড়ুন: India- Bangladesh Border: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দুষ্কৃতী রুখতে বিশেষ ব্যবস্থা, একাধিক এলাকায় বসছে সিসি ক্যামেরা


পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্সেলের উপর শুধুমাত্র বাবলুর নাম এবং ফোন নম্বরেরই উল্লেখ ছিল। কে ওই পার্সেল পাঠিয়েছেন, কোথা থেকে পাঠিয়েছেন, তা লেখা ছিল না। এই ঘটনায় প্রাণহানি না ঘটলেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। এই ঘটনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, অবিলম্বে তাঁদের গ্রেফতারি এবং কড়া শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন এলাকাবাসী। এ নিয়ে পুলিশ এবং প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াতেই শনিবার দিনভর সেখানে বন্‌ধ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।


পুরন শত্রুতা থেকে পরিকল্পনামাফিকই কেউ এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকবেন বলে মনে করছে পুলিশ। যে টোটোচালক পার্সেলটি দোকানে পৌঁছে দেন, তাঁর খোঁজ চালানো হচ্ছে। পার্সেলটি পৌঁছে দেওয়ার সময় টোটোয় এক মহিলা বসেছিলেন বলেও স্থানীয় সূত্রে জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁকেও শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। শুধুই ব্যক্তিগত শত্রুতা থেকে এমন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, নাকি এর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।