সোমনাথ মিত্র, হুগলি : হুগলির (Hooghly) হরিপালে তৃণমূল (TMC) পরিচালিত পঞ্চায়েত অফিসে চুরি ! ৪ টি আলমারি ভেঙে প্রচুর নথি খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ ! খোয়া গেছে দুটি টিভিও। বিরোধীদের অভিযোগ, দুর্নীতি ঢাকতে পরিকল্পনা করে এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। যদিও শাসকদলের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) আগে তাদের বদনাম করতেই এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে।  


শিরোনামে হুগলি !


রাজ্য জুড়ে তোলপাড় ফেলে দেওয়া নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে (Recruitment Scam) গ্রেফতার যুব তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষ। বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার অয়ন শীলের গ্রেফতারির সৌজন্য ইতিমধ্যেই শিরোনামে উঠে এসেছে হুগলি। এবার সেই হুগলিরই হরিপালে তৃণমূল পরিচালিত একটি পঞ্চায়েত অফিসে চুরির ঘটনা ঘিরে উঠল নথিপত্র লোপাটের অভিযোগ!


হরিপালের নালিকুল পশ্চিম গ্রাম পঞ্চায়েত। অফিসের সাফাইকর্মীর দাবি, এদিন সকালে এসে তিনি দেখেন, দোতলার পরপর তিনটে ঘরের দরজা ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। খবর পেয়ে দ্রুত চলে আসেন তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান। খবর যায় পুলিশেও। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, একটি ঘরে থাকা ৪টি আলমারিই ভেঙে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সেই আলমারিগুলিতে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি রাখা ছিল। এছাড়াও পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানের ঘর থেকে টিভিও চুরি করে নিয়ে গেছে দুষ্কৃতীরা। নালিকুল পশ্চিম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও তৃণমূল নেতা মেহনাজ হালদার বলেছেন, 'ছয় বছর আগেও চুরি হয়েছিল। কি উদ্দেশ্যে এটা হচ্ছে জানি না।'


নথি লোপাটের জন্য চুরি ? উঠছে প্রশ্ন


পঞ্চায়েত অফিসে এখন কোনও নগদ টাকা থাকে না ! প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি শুধু টিভি চুরির জন্যই দুষ্কৃতীরা পঞ্চায়েত অফিসে হানা দিয়েছিল ? নাকি, দু্ষ্কৃতীদের টার্গেট ছিল পঞ্চায়েত অফিসের আলমারিতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ নথি ? এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূলকে নিশানা করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। 


হরিপালের সিপিএমের এরিয়া কমিটির সম্পাদক মিন্টু বেরার অভিযোগ, 'এটা পরিকল্পিত ও চক্রান্ত। আমফানে ত্রিপল চুরি, এলাকার গাছ চুরি, একশো দিনের টাকা চুরির সহ সমস্ত রকম দূর্নীতি ঢাকতে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে প্রধান এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।' পাল্টা নালিকুল পশ্চিম অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি সুশীল আমানি বলেছেন, 'সামনে পঞ্চায়েত ভোট আসছে। আমাদের যে উন্নয়ন চলছে সেটা সহ্য করতে না পেরে বিরোধীরা সরকারি অফিসেও একটা চক্রান্ত করতে চাইছে। পঞ্চায়েতকে বদনাম করার জন্য।'


এদিকে, এদিন হরিপাল থানার পুলিশকে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন পঞ্চায়েত প্রধান। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি করেছে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, কী কী নথি খোয়া গিয়েছে।


আরও পড়ুন- সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে টাকা হাতানোর অভিযোগ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া নেতার বিরুদ্ধে