সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, কামারপুকুর: সমস্ত রীতিনীতি মেনে মহাসমারোহে কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠে পালিত হচ্ছে দুর্গা পুজো। সকাল থেকেই মন্ত্রপাঠ, আরতি, হোমযজ্ঞের মাধ্যদিয়ে চলছে পুজো। 


সকাল থেকে ভক্তদের ভিড় ছিল ভালই। তবে তাদের প্রবেশ ছিল মঠের নিয়ন্ত্রণে। করোনার সমস্ত নিয়ম মেনেই চলছে প্রবেশ। স্যানিটাইজার, দূরত্ববিধি ও মাস্ক বাধ্যতামূলক। তবেই ভক্তদের প্রবেশে মিলছে ছাড়। 


তাবে কুমারী পূজা সরাসরি দেখতে পাননি ভক্তরা। সারাদিন নিয়ম মেনে প্রবেশ করতে পারলেও কুমারী পূজার সময় সকাল ৯টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত বন্ধ ছিল কামারপুকুর মঠের গেট। পরে আবার খুলে দেওয়া হয় গেট। পাশাপাশি এবার বন্ধ রয়েছে মঠের খিচুড়ি প্রসাদ। তার পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে শুকনো লাড্ডু।


আরও পড়ুন: অষ্টমী তিথিতে কুমারী ও সন্ধিপুজোর গুরুত্ব কেন বেশি?


বেলুড় মঠে চিরাচরিত প্রথা মেনে আজ সকালে হল মঙ্গলারতি।  এরপর শুরু হয় মহাষ্টমীর পুজো।  সকাল ৯টা থেকে হয় কুমারীপুজো। বেলুড়ে প্রথম কুমারী পুজো চালু করেন স্বামী বিবেকানন্দ৷ ১৯০১ সালে মা সারদার উপস্থিতিতে শঙ্খ, বাদ্য, অর্ঘ, বলয় ও বস্ত্রাদি সহযোগে ৯ জন কুমারীকে পুজো করেছিলেন তিনি৷ 


সেই থেকেই এই পুজো নিষ্ঠা সহকারে পালন করে চলেছে বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ৷ তবে কোভিড বিধি মেনে এবার বেলুড় মঠে দর্শকদের প্রবেশ নিষেধ। বেলুড়মঠ, বাগবাজার, শোভাবাজারে, পুজোর আরতি বাড়তি আকর্ষণ।  রীতি মেনে, শাস্ত্র মতে দেবীর আরাধনা।  


চিরাচরিত প্রথা মতো বাগবাজারের প্রতিমা সাবেকি। ১০৩ বছরে পড়ল বাগবাজারের পুজো। পরাধীন ভারতে বাগবাজারের এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অনেক বিপ্লবী। 


তখন থেকেই অস্টমীর দিন শরীরচর্চা, লাঠিখেলা থেকে শুরু করে নানা শারীরিক কসর‍তের মাধ্যমে দেবীকে অঞ্জলী দেওয়া হয়। বাগবাজার সর্বজনীনে এই বীরাষ্টমী আজ মাতৃ আরাধনার অঙ্গ।  


আরও পড়ুন: প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত চলে চণ্ডীপাঠ, পাঁচশো বছরের পুরনো গোঘাটের ফুলুই ঘোষবাড়ির পুজো


আজ মহাষ্টমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে মাইকে চলছে স্তোত্রপাঠ৷ সাড়ম্বরে হচ্ছে দেবী বন্দনা। দিকে দিকে নেওয়া হচ্ছে পুষ্পাঞ্জলী। আজ বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে কুমারী পুজোও হচ্ছে৷ দিকে দিকে দীপের আলোয় উমা বরণ চলছে। 


কোচবিহারের শহরে ৫০০ বছরের পুরনো বড়দেবীর মন্দিরে অষ্টমী পুজো উপলক্ষে ভক্তদের ভিড়।  এক সময় কোচবিহার রাজপরিবার এই পুজোর প্রচলন করেছিল। 


এখানে দুর্গা পূজিত হন বড়দেবী রূপে।  অষ্টমীতে পশুবলির প্রচলন আছে।  তবে এই পুজোয় দুর্গার সঙ্গে কার্তিক গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী থাকে না।  দুর্গার বাহন সিংহ ও চিতাবাঘ।  দেবী এখানে রক্তবর্ণা।