সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, চুঁচুড়া (হুগলি): উৎসব মানুষকে কাছে টানে, বেঁধে বেঁধে রাখে। উৎসবে ধর্মের কোনও বিভেদ থাকে না। দুর্গোৎসব তার ব্যতিক্রম নয়। দুর্গাপুজো সকলের মনের উৎসব, প্রাণের উৎসব। এবছরের পুজোতে সেই উদাহরণই আরও একবার তুলে ধরল চুঁচুড়ার এক আশ্রম।
দুর্গাপুজোয় মহাষ্টমীর যে রীতিনীতি তাঁর মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছে কুমারী পুজো। কুমারী রূপে মা দুর্গা পূজিত হন বিভিন্ন মণ্ডপে। ছোট্ট ছোট্ট মেয়েদের সাজানো হয় দুর্গা রূপে। সমস্ত নিয়ম মেনে পুজো করা হয় তাঁদের। এখানেই এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করল চুঁচুড়ার ঝিঙেপাড়ার সারদা রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম। সেখানে কুমারী রূপে পুজো করা হল এক মুসলমান কন্যাকে। উৎসবের আসল মজা, আনন্দ, আবেগ ঠিক এখানেই। যেখানে ধর্মের ভেদাভেদ ধুয়েমুছে একাকার হয়ে যায়। কে হিন্দু, কে মুসলমান, সেই হিসেব কেউ রাখে না। কেবল নিজেকে উজাড় করে একে অন্যের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে।
আরও পড়ুন: অষ্টমীর সাজে ট্যুইনিং রাজ চক্রবর্তী ও খুদে ইউভানের, ছবি পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায়
বছর আটেকের কুমারী সাহেবা খাতুনকে আজ কুমারী রূপে পুজো করা হয়। বিগত চার বছর ধরে তাঁর বড় দিদিকেও কুমারী রূপে পুজো করা হয়েছে। কথিত আছে, কুমারীর মধ্যে মা দুর্গা অধিষ্ঠান করেন। হিন্দুশাস্ত্র মতে মুনি-ঋষিরা কুমারীর মধ্যে প্রকৃতিকে দেখতে পেতেন, প্রকৃতি মানে নারী। সেই কুমারী থেকেই মা দুর্গার আবির্ভাব হয়।
বেলুড় মঠে স্বয়ং স্বামী বিবেকানন্দ কুমারী পুজো শুরু করেছিলেন। বেলুড় মঠ ও তাদের শাখাগুলিতে নিয়ম মেনে কুমারী পুজো হয় অষ্টমীতে।
চুঁচুড়া মঠের মহারাজের কথায়, 'আমরা রামকৃষ্ণের মতে পুজো করি। তাই আমরা ধর্মের বিভেদ করিনা।'