সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: সরকারি প্রকল্পে তৈরি করা বাড়ি ভাঙল সরকারই (government)। কারণ, বাড়ি তৈরির আগে জমির মালিকানার নথি (documents) পরীক্ষা ঠিকমতো হয়নি। যার ফলে গৃহহীন হতে হল একটি পরিবারকে। ভুলের কথা স্বীকার করে নিলেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ও জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। নতুন বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। ঘটনাস্থল হুগলির (Hooghly) পোলবার আমনান পঞ্চায়েত এলাকা।


সমস্যা কোথায়?
বাড়ির মালিকের কোনও জমি নেই, যে বাড়িটি রয়েছে, সেটি অবৈধভাবে (illegal) বাড়ি (house) উঠেছে পূর্ত দফতরের জমিতে। নিজের জমি না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে মঞ্জুর হল সরকারি প্রকল্পের টাকা? স্থানীয় পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদ স্বীকার করেছে, টাকা দেওয়ার আগে খতিয়ে দেখা হয়নি জমির নথি! যার ফলেই এই সমস্যা।


কেন ভাঙা হল বাড়ি:
স্থানীয় সূত্রে খবর, ৩৮ বছর ধরে জোড়া অশ্বত্থতলায় পূর্ত দফতরের জমিতে বসবাস করছিলেন কল্পনা হেমব্রম নামে এক মহিলা। বছর ২ আগে সেখানে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে স্থায়ী বাড়ি তৈরি হয়। যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এক ব্যক্তি। সেই মামলায় সপ্তাহখানেক আগে বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই মতো বুধবার বাড়িটি ভেঙে দেয় পূর্ত দফতর। সমস্যা পড়েছে কল্পনা হেমব্রমের পরিবার। এই বিষয়ে আমনান গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান জানিয়েছেন, নিজের জায়গা ছাড়া আবাস যোজনার ঘর দেওয়া হয় না। কিন্তু অনেক সময় গরিব মানুষের থাকার জায়গা নেই দেখে আবাস যোজনার বাড়ি করে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।


কী বলছে জেলা পরিষদ?
হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, 'আমরা মানবিক তাই গরিব মানুষের কথা ভাবি। অনেক ক্ষেত্রে কাগজ না দেখেই করে দিই।  এখানে যে মহিলাকে আবাস যোজনার ঘর দেওয়া হয়েছিল সেটা পূর্ত দফতরের জমি।'


বিজেপির সমালোচনা:
গোটা ঘটনায় শাসক দলের বিরুদ্ধে সরব গেরুয়া শিবির। স্থানীয় বিজেপি নেতা অর্পণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'সরকারি বাড়ি সরকারই ভাঙল। নিয়ম মানা হয়নি। আবাস যোজনার বাড়ি পেতে গেলে একজন উপভোক্তার নিজের জমি থাকতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা দেখা হয়নি।'


চুঁচুড়ার মহকুমা শাসক জানিয়েছেন, বেআইনি কাজ হয়েছে। আবাস যোজনার বাড়ি অনুমোদনের সময় উপভোক্তার জমির কাগজ দেখা হয়। এক্ষেত্রে পঞ্চায়েত কী করেছিল জানা নেই। হাইকোর্টের নির্দেশে বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে ওই মহিলাকে অন্য জায়গায় বাড়ি করে দেওয়া হবে।


আরও পড়ুন: কবিগুরুর স্মৃতিতে 'ডাকঘর সংগ্রহশালা'