অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, চন্দননগর: পুরোদস্তুর উৎসবের মরসুম চলছে। দুর্গাপুজো মিটেছে। এবার সামনে কালীপুজো। তারপরই জগদ্ধাত্রী পুজো। আর জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই চন্দননগর।
কিন্তু দুর্গাপুজো কাটতেই যেভাবে রাজ্যে করোনার সংক্রমণ গতি পেয়েছে, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্যোক্তাদের।চন্দননগর পুর-প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ১৬টি ওয়ার্ডকে কনটেনমেন্ট জোনে পরিণত করা হয়েছে। চন্দননগরের ওই ১৬টি ওয়ার্ড মিলিয়ে অনেকগুলি জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেখানকার পুজো উদ্যোক্তারা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
চন্দননগরের জ্যোতির মোড়ের জগদ্ধাত্রী পুজো যেখানে হয়, সেটা পড়ছে কনটেনমেন্ট জোনের মধ্যে। গতবার করোনা আবহে ঘটে পুজো হয়েছিল চন্দননগরের আরেক ঐতিহ্যশালী বাগবাজারে। কিন্তু, এবার তাদের পুজোয় তৈরি হয়েছে প্রতিমা। সাজানো হচ্ছে মণ্ডপ।
সামগ্রিকভাবে চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে জগদ্ধাত্রী পুজো হয় ১৭১টি। এর মধ্যে ১২৯টি পুজো চন্দননগরের চন্দননগরের ১৮টি ঘাটে হয় বিসর্জন।এখন কলকাতায় দুর্গাপুজোর ভিড় এবং তার পরবর্তী করোনা এফেক্ট দেখে, চন্দনগরের পুজো উদ্যোক্তা থেকে পুর-প্রশাসন প্রত্যেকেই চিন্তিত।
আরও পড়ুন: উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্যের করোনা সংক্রমণ, একদিনে আক্রান্ত ৯৮৯, মৃত ১০
চন্দননগরের পুর-প্রশাসক স্বপন কুণ্ডু বলেন, রাজ্য যা নির্দেশ দিচ্ছে, হাইকোর্ট যা বলছে, তা মেনেই হবে, কনটেনমেন্ট জোনগুলি আছে, তেমনই মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন আছে, পুলিশ এবং পুরসভা নজরদারি চালাচ্ছি, প্রচার করছি।
চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর শোভাযাত্রা বিশ্ব-বিখ্যাত। জগদ্ধাত্রী বিসর্জন ও আলোর উৎসব চাক্ষুষ করতে লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হয় চন্দননগরে।কিন্তু, এবার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চন্দননগরের কেন্দ্রীয় পুজো কমিটি কোনও শোভাযাত্রা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কমিটির এক সদস্য বলেন, আমরা প্রত্যেকটা মণ্ডপের সামনে আলোর ডিসপ্লে হবে, রাস্তায় রাস্তায় আলো থাকবে। তার ওপর প্রতিযোগিতা হবে। তবে শোভাযাত্রা হবে না। দিনের বেলায় আলো থাকতে থাকতে বিসর্জন হবে। ৩ দিক খোলা মণ্ডপ হবে। মণ্ডপের ভিতরে ঢুকতে হবে, এমন থিম যেন না করা হয়।
জগদ্ধাত্রী পুজোর আগে করোনা বিধির কড়াকড়ির ছবি ধরা পড়েছে চন্দননগরের স্ট্র্যান্ড ঘাটে। জগদ্ধাত্রী পুজো নিয়ে চন্দননগরের রবীন্দ্রভবনে এদিন উদ্যোক্তাদের নিয়ে বৈঠক করে প্রশাসন। নির্দেশ দেওয়া হয়, রাজ্য সরকারের কোভিড বিধি মেনেই পুজো করতে হবে।
সংক্রমণ প্রতিরোধে পুজো উদ্যোক্তা থেকে প্রশাসন - সকলেরই দায়িত্ব আছে। সমান দায়িত্ব পালন করতে হবে সাধারণ মানুষকেও। বারবার সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, দুর্গপুজোর ভিড় দায়ী। লাগামহীনভাবে মানুষ যা করেছে, তারজন্যই এই ফল। অবিলম্বে এই উদ্যোগ থেকে দূরে থাকতে হবে। সামনে আরও কয়েকটা উত্সব রয়েছে। না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
১১ নভেম্বর চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর সপ্তমী। বিসর্জন হবে ১৪ ও ১৫ নভেম্বর - দু’দিন ধরে।