বাপন সাঁতরা, আরামবাগ: ডিভিসির ছাড়া জল ঢুকে নতুন করে প্লাবিত হল খানাকুল ১ ও ২ নং ব্লকের ২৪ টি পঞ্চায়েত এলাকা। কাল রাত পর্যন্ত ডিভিসির জল ঢোকে এলাকায়। ভয়াবহ পরিস্থিতি খানাকুল ২ নং ব্লকের মারোখানা, পানশিউলি, পলাশপাই, জগৎপুর, নন্দনপুর, রাজহাটি সহ একাধিক গ্রাম।বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সব গ্রামেরই যোগাযোগ ব্যবস্থা। সড়কপথ ডুবে রয়েছে কোথাও এক কোমর জলে। কোথাও বুক সমান জলে। জল উঠেছে একতলা সমান বাড়িতে।জলবন্দি হয়েছেন প্রায় দুই লক্ষেরও বেশি মানুষ।অনেকে বাড়ির দোতলায় ও ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে আশ্রয় নিয়েছে ত্রাণ শিবিরে।
ইতিমধ্যেই পঞ্চাশের বেশি ত্রাণ শিবির করা হয়েছে খানাকুলে। আরামবাগ ও পুরশুড়া ব্লকেও চলছে একাধিক শিবির।অনেক ত্রাণ শিবিরেও আবার জল উঠেছে। স্কুল বাড়ির একতলা ডুবে যাওয়ায় ভরসা হয়েছে দোতলা। বিপদ এড়াতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে একাধিক এলাকায়।এমনকি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মোবাইলের নেটওয়ার্ক। পর্যাপ্ত নৌকা না থাকায় বিপাকে পড়েছেন বহু দুর্গত।
নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে DVC জল ছাড়ায় প্লাবিত হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব বর্ধমানের একাংশ। প্লাবিত নিম্ন দামোদর অববাহিকার একাধিক গ্রাম। এদিকে প্রায় প্রতিবছরই এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় বাংলা। যার জন্য অতীতেও 'ম্যানমেড বন্যা' বলেই কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই আবহে প্লাবন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সরাসরি পুরশুড়ায় যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এবারেও না জানিয়ে জল ছাড়ার অভিযোগ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'সাড়ে ৩ লক্ষ কিউসেকের উপর জল ছেড়েছে। এত জল জীবনেও ছাড়েনি। ম্যানমেড ফ্লাড, পরিকল্পিতভাবে বাংলাকে ডুবিয়েছে, নিজেদের রাজ্যকে বাঁচাবার জন্য।' এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বারবার বলে বলে ফেডাপ হয়ে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় সরকার ড্রেজিং করে না। ডিভিসি আরও ২ লক্ষ কিউসেক জল রাখতে পারে। যখন তোমাদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ভরে, তখন তোমরা কেন ছাড়ো না ? নিজেদের রাজ্যটাকে বাঁচাও, আর সবটা বাংলার উপর ঠেলে দাও। বাংলার কত বঞ্চনা সহ্য করবে ?' প্রশ্ন তোলেন মমতা।
আরও পড়ুন, ভাগীরথীতে জলস্তর বাড়তেই ফেরিঘাট বন্ধের নির্দেশ এই এলাকাগুলিতে, ফের কখন মিলবে পরিষেবা ?
জল-ভোগান্তির মধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে চরমে উঠেছে পানীয় জলের সঙ্কট। নৌকা বা ডিঙি চড়ে অনেক দূর থেকে পানীয় জল নিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বিগত কয়েকদিন ধরে ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের পাকা বাড়ির একতলা এখনও জলের তলায়। ছাদের উপর ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও রকমে বসবাস করছেন তাঁরা। জলে ডুবে থাকা রাজ্য সড়কের উপর দিয়েই প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করছেন মানুষজন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।