সন্দীপ সরকার, কলকাতা : আর জি কর হাসপাতালে আহত সিভিক ভলান্টিয়ারের অস্ত্রোপচার হয়েছিল গত ৮ অগাস্ট, সেই ভয়ঙ্কর রাতে, যেদিন ওই হাসপাতালেই  নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও খুন করা হয় হাসপাতালের চিকিৎসককে। তারপর মাস পেরিয়ে গেলেও ছাড়া হয়নি ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে। কেন ? উঠছে প্রশ্ন। এরই মধ্যে আরও একটি চাঞ্চল্যকর বিষয় সামনে এল সিসিটিভি ফুটেজে। সিবিআই ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখেছে, তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর দিনই সঞ্জয় রায়কে ওই ব্যক্তির স্ট্রেচারের ট্রলি টানতে দেখা গিয়েছে। তাহলে যে রাতে তরুণীকে হত্যা করা হয়, সেদিন সকাল থেকেই হাসপাতালে ঘাঁটি গেড়েছিল সঞ্জয়? এমনই নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে সিবিআইয়ের তদন্তে। 


আর জি কর-কাণ্ডে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ।  কিন্তু সঞ্জয় কি ৮ অগাস্ট দুপুরেও আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজেই ছিল? আহত সিভিক ভলান্টিয়ার শুভ দে-র মা জানান, 'সেদিন, ছেলের সঙ্গে আমরা দুজন ছিলাম। একটা ওয়ার্ড বয় ছিল। আরেকটা বাইরের লোক ছিল।'  


ঘটনার দিন অর্থাৎ ৯ অগাস্ট, ভোর চারটে তিন মিনিটে, আর জি কর মেডিক্য়ালের ৪ তলার করিডর দিয়ে  হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছিল সঞ্জয়কে। আর নির্যাতিতা তরুণী চিকিৎসকের ওপর নৃশংস ঘটনাটি ঘটে ৯ অগাস্ট ভোররাতে। আর ৮ তারিখ সন্ধেয় অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা ছিল মানিকতলা থানার সিভিক ভলান্টিয়ার, দুর্ঘটনায় আহত শুভ দে-র। রাত ১১টায় শুরু হয় শুভর অস্ত্রোপচার। শেষ হয় রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ। তারপর এমারজেন্সি বিল্ডিংয়ের পাঁচতলার অর্থোপেডিক বিভাগে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। চেষ্ট মেডিসিন বিভাগের চারতলার যে সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, এই অর্থোপেডিক বিভাগ হল ঠিক তার ওপরের অর্থাৎ পাঁচতলায়। তদন্তে নেমে স্বাভাবিকভাবেই এই শুভ দে-কেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। কারণ সিবিআই সূত্রে দাবি, হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, শুভ যখন ট্রলিতে শুয়ে রয়েছেন, তখন সেই ট্রলি টানতে দেখা গেছে সঞ্জয় রায়কে।   শুভর বক্তব্য, ৮ অগাস্ট দুপুরে তাঁকে যখন এক্স রে করাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখনই সম্ভবত সেখানে ছিল সঞ্জয়। শুভর বান্ধবীর বক্তব্যও তাই। 


এক্ষেত্রে, প্রশ্ন উঠছে,  যদি এটাই ঠিক হয়, তাহলে কি সঞ্জয় দুপুর থেকেই হাসপাতালে ছিল? কেন? কী উদ্দেশে? অন্যদিকে আরও বড় প্রশ্ন, অস্ত্রোপচারের পর নির্দিষ্ট সময় কেটে গেলেও এতদিন ধরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হচ্ছিল না শুভ দে-কে। কেন? সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের পর সম্প্রতি ৩৭ দিন পর ছাড়া পেয়েছেন তিনি।  


আরও পড়ুন :              


বাবার ছোট্ট দোকান, মধ্যবিত্ত জীবন-যাপন, আলমারি ভর্তি পুরস্কার, আন্দোলনের-মুখ দেবাশিসের বাড়িতে ABP Ananda