সুনীত হালদার, হাওড়া: সারাদিনই চলছে তাণ্ডব। কখন তাড়া, কখনও আবার সামনে পেলেই কামড়। একদল হনুমানের তাণ্ডবে কার্যত গৃহবন্দি হাওড়ার আমতার বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনে কমপক্ষে ৩০ জন গ্রামবাসীকে হনুমান কামড়ানোয় গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে এমন পরিস্থিতি গ্রামবাসীরা ভয়ে বাড়ির বাইরে বেরোতে পারছেন না। এমনকী, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলেও পর্যন্ত যেতে পারছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত হনুমানকে ধরতে না পারায় গ্রামবাসীরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। 


ঠিক কী পরিস্থিতি? 


গত কয়েকদিন ধরে আমতার এক নম্বর ব্লকে বালিচক, সাহাচক এবং বানুচক গ্রামে হনুমানের তাণ্ডব চলছে। হনুমানের দল বাড়ির ছাদ এবং বড় বড় গাছে সারাদিন লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। লোকজনকে রাস্তাঘাটে দেখলে হনুমানরা তেড়ে যাচ্ছে এবং কামড়ে দিচ্ছে। 


এছাড়াও হনুমানরা দল বেঁধে চাষের জমিতে হামলা চালানোর ফলে চাষীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন। গত এক সপ্তাহে এখনও পর্যন্ত তিনটি গ্রামে কমপক্ষে ৩০ জন হনুমানের কামড়ে আহত হয়েছেন। জখম গ্রামবাসীরা ভর্তি আছেন এসএসকেএম হাসপাতাল, হাওড়া জেলা হাসপাতাল, উদয়নারায়নপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এবং আমতা গ্রামীণ হাসপাতালে। বেশ কয়েকজন আহত গ্রামবাসীকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও এখনো ১৭-১৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে। 


এই ঘটনায় গ্রামগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারি স্থানীয় বালিচক হাইস্কুলে পঠন-পাঠন বন্ধ রাখা হয়। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ভয়ে স্কুলে যেতে পারছে না। এমনকি স্কুলে লাঠি হাতে হনুমান তাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন শিক্ষকরা। কার্যত শিকেয় ওঠে পড়াশোনা।         


আরও পড়ুন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২০০৯-এর প্যানেল উত্তীর্ণ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ


ভয়ে এবং আতঙ্কে বেশিরভাগ গ্রামবাসী নিজেদের ঘরবন্দী করে রেখেছেন। প্রয়োজন ছাড়া তারা রাস্তায় বেরোচ্ছেন না। রাস্তায় বেরোলেও লাঠি হাতে তারা বেরোতে বাধ্য হচ্ছেন। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন হনুমানের দলের মধ্যে দু-তিনটি হনুমান পাগল হয়ে যাওয়ার ফলে তারাই মানুষকে কামড়াচ্ছে। হঠাৎ পেছন থেকে তারা মানুষকে আক্রমণ করছে। মানুষ কামড়ানোর দৃশ্য সিসিটিভিতেও দেখা যাচ্ছে। 


গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন তারা এ ব্যাপারে স্থানীয় পঞ্চায়েতে  জানান। পঞ্চায়েত থেকে জেলা বনদপ্তরে জানানো হলে বনকর্মীরা ছাদে খাঁচা বসান। সেই খাঁচায় একটি হনুমান ধরা পড়লেও এখনো দুটি হনুমান ধরা পড়েনি।