সুনীত হালদার, আন্দুল: দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর বৃহস্পতিবার প্রয়াত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (West Bengal EX Chief Minister And CPIM Leader Buddhadeb Bhattacharjee) । তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন রাজ্য তথা দেশের বামমনস্ক মানুষরা। শুক্রবার কলকাতার রাস্তায় তাঁর শেষ যাত্রায় অসংখ্য মানুষের উপস্থিতি তারই প্রমাণ দিয়েছে। বুদ্ধবাবুর অসংখ্য গুণমুগ্ধ মানুষের মতো তাঁর মৃত্যুকে শোকাহত হয়েছেন হাওড়া (Howrah) জেলার আন্দুলের আরগড়ির কোলে পরিবারও।
কারণ, ছাত্র সংঘর্ষের জেরে এই পরিবারের ছেলে স্বপন কোলের মৃত্যুর পর পরিবারের অন্য সদস্যদের বাড়িতে এসে সান্তনা দিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন পরিবারের। এমনকী চাকরি দিয়েছিলেন স্বপনের বড় দাদা তাপস কোলেকে। আশ্বাস দিয়েছিলেন এই ঘটনায় জড়িত দোষীদের শাস্তির দেওয়ার বিষয়ে।
সময়টা ছিল ২০১০ সালের ১৫ ডিসেম্বর। আন্দুলের প্রভু জগদবন্ধু কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এসএফআই ও টিএমসিপির মধ্যে সংঘর্ষের জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে কলেজ চত্বর। গণ্ডগোলের সময় মাথায় লাঠির আঘাতে গুরুতর জখম হন ওই কলেজের এসএফআই কর্মী ও ছাত্র নেতা স্বপন কোলে। আর পরেরদিন তাঁর মৃত্যু হয় হাসপাতালে। এই ঘটনার জেরে সেই সময় তোলপাড় হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। এরপর ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি স্বপনের বাড়িতে তাঁর মাকে সান্ত্বনা দিতে আসেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আজ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রয়াত হয়েছেন। তাই তাঁর মৃত্যুতে শোকাহত কোলে পরিবার।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বুদ্ধবাবুর মৃত্যুর খবর শুনে স্বপনের মা রেবা কোলে বলেন, "খবরটা শুনেই ভীষণ কষ্ট লাগছে। কারণ আমার ছোট ছেলের মৃত্যুর পর বুদ্ধবাবু তাঁদের মতো দরিদ্র পরিবারের বাড়িতে এসেছিলেন। বিধানসভাতেও চাকরি দিয়েছেন বড় ছেলে তাপসকে। সেই সঙ্গে দোষীদের শাস্তির আশ্বাসও দিয়েছিলেন।" স্বপনের বড় ভাই তাপস কোলে জানান, তখন তাঁদের পরিবার খুবই দরিদ্র ছিল। বুদ্ধবাবু না থাকলে তাঁরা ভেসে যেতেন। তখন ওই দুঃসময়ে তিনি তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। মানুষ হিসেবেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অসাধারণ ছিলেন। তাই তাঁর মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। কোলে পরিবারের সদস্যরা তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছেন।