কলকাতা: আজ আর তাঁর কোনও বার্তা দেওয়ার নেই। কিছু শোনার নেই। কিন্তু তাঁকে শেষবারের মতো দেখার জন্য আজ লোকে লোকারণ্য আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। আজ শেষশয্যায় শুয়ে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। আর তাঁকে দেখার জন্য যেমন সাধারণ মানুষের ভিড় জমেছে, তেমনই হাজির হয়েছেন অনেক অরাজনৈতিক মানুষও। এসেছেন বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত মানুষ থেকে শুরু করে বিরোধী শিবিরও প্রচুর মানুষেরা এসেছেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে।
আজ বুদ্ধবাবুকে দেখতে এসে চন্দন সেন বলেন, 'এই ১৩ বছরে মানুষ বুঝতে পেরেছেন বাংলার মানুষ কী ভুল করেছেন ওঁর সঙ্গে। এ তারই ফল। এই জনসমুদ্র কিছুই না, এর পরে আর রাস্তা দেখা যাবে না।' শঙ্কর চক্রবর্তী বলছেন, 'কেমন আছো, কী খবর.. এর বাইরে কথা হয়নি কখনও। একবার মনে আছে, উনি তখন প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। আমি মঞ্চে উঠে 'পরিচয়' কবিতাটা আবৃত্তি করেছিলাম। আবৃত্তি শেষ করার পরে নেমে যখন বসলাম, বুদ্ধবাবু আমায় বলেছিলেন, 'এটা আমি বলব ভেবেছিলাম, তুমিই তো বলে দিলে।' আমি বলেছিলাম, আপনার তো বলার অনেক কিছু রয়েছে। উনি একাধারে লেখক ও নাট্যকার। ওঁর লেখা নাটক অভিনীত হয়েছিল। একসময়ে দলের মধ্যে মনোমালিন্য সত্ত্বেও উনি চেষ্টা করেছিলেন ভাল কিছু করার। রাজ্যে উনি শিল্প আনতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা করে যেতে পারেননি। এই মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। '
এদিন হাজির ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়ও। তিনিও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শেষযাত্রায় সামিল হতে এসেছিলেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। বাবুল বলছেন, 'এখানে এসেছি খুব ব্যক্তিগত একটা জায়গা থেকে। ২০১০ সাল নাগাদ আমার একটা অ্যালবাম মুক্তি পেয়েছিল 'যদি জানতেম' বলে। আমি অনুরোধ করতে গিয়েছিলাম তিনি যদি আমার অ্যালবামটা রিলিজ করে দেন। খুব খুশি হয়েই রাজি হয়েছিলেন উনি। আমায় ডেকে নিয়েছিলেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। ব্যক্তি বুদ্ধবাবু সিনেমা দেখতেন, গান শুনতেন, সংস্কৃতি সম্পর্কে ভীষণ ওয়াকিবহাল একটা মানুষ ছিলেন, তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় বাদ রেখে, মানুষ বুদ্ধবাবুকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই আজ আমার এখানে আসা। বাম আন্দোলনে যে সাত মহারথীর কথা বলা হয়, উনি তাঁদের মধ্যেই একজন। বুদ্ধবাবুর চলে যাওয়াটা একটা অপূরণীয় ক্ষতি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।