কাঁথি (পূর্ব মেদিনীপুর): ‘আমি কখনও শিশির অধিকারীকে (sisir adhikari) অসম্মান (insult) করিনি’, কাঁথির (contai) সভায় (meeting) বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (abhishek banerjee)। এই সভা থেকেই এদিন শিশির-পুত্র তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে (suvendu adhikari) তীব্র আক্রমণ শানান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। নাম না করে বলেন, '‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাঁকে ভরসা করে জেলার দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।' কিন্তু তিনি যে কখনও কাঁথির সাংসদকে কিছু বলেননি, সে কথাও মনে করান অভিষেক।
শিশির-প্রসঙ্গ
গত মাসের শেষ দিকেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। বলেন, "অভিষেককে আমার বাড়িতে চা খেতে আসতে বলব। অভিষেক চা খেতে এলে খুশিই হব।' বাড়ির দোরগোড়ায় তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সভা উপলক্ষ্যে তাঁকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার পরই এই উত্তর দেন দিব্যেন্দু যা থেকে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এর ঠিক আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজনৈতিক ভাবে এটিকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলা হলেও পর্যবেক্ষকদের অনেকে এর মধ্য়ে অন্য আঁচ খুঁজতে শুরু করেছিলেন। এমনকি, দিব্যেন্দু অধিকারীর চায়ের আমন্ত্রণের পর তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষকেও দলের মহিলা কর্মীদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, তমলুক সাংসদের স্ত্রীর সঙ্গে জনসংযোগ করতে। এসবের প্রেক্ষিতে অধিকারী পরিবারের কর্তাকে নিয়ে অভিষেকের আজকের মন্তব্য নতুন করে জল্পনা তৈরি করেছে। তবে একই সঙ্গে শুভেন্দুকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি তিনি। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ মনে করান, তিনি শিশির অধিকারীকে নিয়ে কিছু না বললেও তাঁর পরিবারকে লাগামহীন আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। অভিষেকের কথায়,'শালীনতা ছাড়িয়ে আমার স্ত্রী, সন্তান, শ্যালিকাকেও আক্রমণ করছেন।’
আরও যা...
বাড়ির কাছে মাঠে সভা নিয়ে হাইকোর্টে কেন, এই প্রসঙ্গ তুলে অভিষেক বলেন, 'এই মাঠে কেন সভা, তা নিয়েও হাইকোর্টে মামলা...পরের বার বাড়ির ২০ মিটারের মধ্যে সভা করব।’ এদিনের সভায় কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকেও একহাত নেন অভিষেক। অভিযোগ, 'হেরেছে বলে বাংলার টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। ১০০ দিনের কাজে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। দিল্লির টাকা লাগবে না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রাখুন।' তবে কোনও ভাবেই যে দুর্নীতির সঙ্গে আপস করা হবে না, সেটাও স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই ইস্যুতে দল যে মোটেও কোনও রকম সমঝোতায় রাজি নয় সেটা বোঝাতে তৃণমূল সর্বভারতীয় সভাপতির বক্তব্য, 'মানুষ যাদের সার্টিফিকেট দেবেন, তাঁরাই পঞ্চায়েতে দাঁড়াবেন। দাদা-দিদির পায়ে ধরে টিকিট পাওয়া যাবে না।' পূর্ব মেদিনীপুরে দুর্নীতির অভিযোগ যে সবথেকে বেশি, সেটা তাঁর দাবিতেই স্পষ্ট।‘ তবে সবটা ফের নতুন করে শুরু করতে হবে, একথাও মনে করান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
আরও পড়ুন:'পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে সফল শিল্প বোমা' ভূপতিনগরে বিস্ফোরণ নিয়ে ঝাঁঝালো ট্যুইট শুভেন্দুর