ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বীরভূম: গরুপাচার মামলায় গত একবছর ধরে জেলে অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। বীরভূমে (Birbhum News) তৃণমূলের (TMC) সভাপতি পদ যদিও এখনও তাঁরই দখলে রয়েছে। কিন্তু তাঁর অনুপস্থিতিতে বীরভূমে এবার গুরুত্ব বাড়ল কাজল শেখের- (Kajal Sheikh)। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়লাভের পর, এবার জেলা পরিষদের সভাধিপতি হলেন কাজল। বীরভূমে তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য়ও তিনি। 


অনুব্রতর গ্রেফতারির পরই জেলা রাজনীতিতে উত্থান শুরু কাজলের


গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত বীরভূমে কার্যত একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল অনুব্রতর। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন অনুব্রতর কথাতেই সেখানে যাবতীয় কাজকর্ম চলত দলের। কাজল বরাবরই অনুব্রতর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত। 
অনুব্রতর গ্রেফতারির পরই জেলা রাজনীতিতে উত্থান শুরু হয় তাঁর। এবার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেলেন। 


নানুর থেকে জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন কাজল। তৃণমূল নেত্রী বীরভূমে যে কোর কমিটি তৈরি করে দেন, তাতে জায়গা পান। এরই মধ্য়ে, প্রথম বার পঞ্চায়েতে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেন কাজল। তাঁকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি করা হয়।


আরও পড়ুন: JU Student Death:'দলনেত্রীর প্রতি ভালবাসা থাকলেই রোষের মুখে..', যাদবপুর ছাত্র মৃত্যু ঘটনায় কী বললেন ব্রাত্য ?


কিন্তু এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মুরারই, নলহাটি, রামপুরহাট বিধানসভা, দুবরাজপুর এবং সিউড়ির মতো বেশ কিছু এলাকায় তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে ধস দেখা গিয়েছে। তাহলে কি সংখ্যালঘু ভোট ফেরাতেই কাজলকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি করা হল? প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। 


জেলা তৃণমূলে কাজলের গুরুত্ববৃদ্ধি নিয়ে যদিও তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের দিকে ইঙ্গিত করেছে বিজেপি। বিজেপি-র বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার কথায়, "সংখ্যালঘু ভোট ফেরাতে, নাকি অনুব্রতর প্রভাব খর্ব করতেই এমন পদক্ষেপ, জানি না।"


লোকসভা নির্বাচনের আগে ব্যাপক জনসমর্থন গড়ে তুলতেই কি এই পদক্ষেপ!


কাজলের গুরুত্ববৃদ্ধির পাশাপাশি বীরভূমে জেলা পরিষদের সভাপতি করা হয়েছে স্বর্ণলতা সোরেনকেও। মহম্মদ বাজার থেকে জেলা পরিষদের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন তিনি। স্বর্ণলতার দাদা আবার দেউচা পাঁচামির খনি আন্দোলনের বড় নেতা, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যুক্ত। তাই স্বর্ণলতাকে গুরুত্ব দেওয়ার নেপথ্যে অন্য কৌশল রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাঁদের মতে, লোকসভা নির্বাচনের আগে ব্যাপক জনসমর্থন গড়ে তুলতেই এই পদক্ষেপ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভুলত্রুটি শুধরে নিয়ে নতুন কৌশলে ঘুঁটি সাজানোই লক্ষ্য জোড়াফুল শিবিরের। বিজেপি নেতা ধ্রুবও একমত এ ব্যাপারে।