মুন্না আগরওয়াল, কুশমণ্ডি: লোকসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করে গিয়েছে সব দলই। এবার নিজের কেন্দ্র দক্ষিণ দিনাজপুরে 'গ্রাম সম্পর্ক অভিযানে'র সূচনা করলেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। নিজেহাতে সেখানে তফসিলি সম্প্রদায়ের প্রবীণদের পা ধুইয়ে দিলেন সুকান্ত। যদিও গোটা বিষয়টিকেই কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, নির্বাচনের আগে গিমিক চলছে। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এসব লোকদেখানো কর্মসূচি চলছে বলে দাবি জোড়াফুল শিবিরের। (Sukanta Majumdar)


দক্ষিণ দিনাজপুর সাংগঠনিক জেলার কুশমুন্ডি বিধানসভার অন্তর্গত আঙ্গারিবন গ্রামে বিজেপি তফসিল মোর্চা আয়োজিত 'গ্রাম সম্পর্ক অভিযানে'র আয়োজন হয় বৃহস্পতিবার। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা এলাকার সাংসদ  সুকান্ত। এদিন তিনি গ্রামের বেশ কিছু তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত প্রবীণ বাসিন্দাদের পা ধুয়ে দেন নিজেহাতে। এদিন সেখান থেকে অতি দ্রত জেলা মেডিক্যাল কলেজ গড়ার দাবিও জানান সুকান্ত। বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানান।  (South Dinajpur News)


ঘটনাস্থল থেকে যে ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, কাঁসার থালায় পা রেখে বসে রয়েছেন প্রবীণরা। বালতি থেকে কাঁসার ঘটিতে জল নিয়ে তাঁদের পা ধুইয়ে দিচ্ছেন সুকান্ত। পা ধোওয়ানোর পর গামছা দিয়ে পা মুছেও দেন তিনি। তার পর আলিঙ্গন করেন প্রত্যেককে। গলায় পরিয়ে দেন উত্তরীয়। এভাবেই দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে 'গ্রাম সম্পর্ক অভিযানে'র সূচনা করলেন সুকান্ত। 


আরও পড়ুন: Calcutta High Court: মেডিক্যাল কলেজ মামলায় CBI রায় নিয়ে নজিরবিহীন সংঘাত

সুকান্তের কথায়, "কেন্দ্রীয় তফসিলি মোর্চার নির্দেশ অনুযায়ী তফসিলি মোর্চা গ্রাম চলো অভিযানের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের রাজ্য তফসিলি মোর্চার উদ্যোগে গ্রামের প্রবীণদের পা ধোওয়ানোর আয়োজন হল। তফসিলি জাতি এবং উপজাতি সমাজের বয়স্ক মানুষদের সম্মান জানিয়েছি আমরা। জীবনের অনেকটা বছর তাঁরা জাতির জন্য অতিবাহিত করেছেন। তাঁদের সেই অবদানকে আজ স্বীকৃতি জানালাম আমরা।"


যদিও এ নিয়ে বিজেপি-কে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দক্ষিণ দিনাজপুরে দলের সহ-সভাপতি সুভাষ চাকি বলেন, "মানুষের মানুষকে সম্মান জানানো উচিত। কিন্তু সুকান্তবাবু যেটা করেছেন, তা ভোটকেন্দ্রিক। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সাজানো। গত ৪.৫ বছরে গ্রামের মানুষ সুকান্তবাবুকে দেখেছেন বলে জানা নেই আমার। আজ যা করলেন, এতেই বোঝা যায় সুকান্তবাবুর পায়ের নীচে মাটি নেউ। সেই রাজনৈতিক মাটি উদ্ধার করতেই নানা রকম কর্মসূচি করছেন তিনি। লোকদেখানো কর্মসূচি করে মানুষকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছেন।"


যদিও সুকান্তের দাবি, তাঁরা চমক দেন না। সমাজকে সঠিক পথে চালনা করতেই রাজনীতি করেন। শুধু মাত্র নির্বাচনে জেতার জন্য রাজনীতি করেন না। তবে উত্তরবঙ্গ গত কয়েক বছরে বিজেপি-র শক্ত ঘাঁটি হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সেখান থেকে খালি হাতে ফিরতে হয় তৃণমূলকে। আটটি লোকসভা আসনের মধ্যে সেবার বিজেপি সাতটিতে জয়ী হয়, কংগ্রেস জয়ী হয় একটিতে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে যদিও জমি কিছুটা পুনরুদ্ধার করে তৃণমূল। বিজেপি-র থেকে দিনহাটা এবং ধূপগুড়ি ছিনিয়ে নেয় তারা।