পার্থপ্রতিম ঘোষ, শিবাসিস মৌলিক, কলকাতা : যত সময় এগোচ্ছে যাদবপুরকাণ্ডে (Jadavpur University Student Murder) ততই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে।  ধৃত সৌরভ চৌধুরী সহ ৩ জনকে লালবাজারে জেরা করেন খোদ সিপি-র। পরে জানা যায়, 'নদিয়ার ছাত্র পড়ে যাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে জেনারেল বডি-র মিটিং ডাকে সৌরভ, হস্টেল ক্যাম্পাসের মধ্যেই খোয়ার মাঠে প্রথম জিবি হয় সৌরভ চৌধুরীর ডাকে '। 'কোনও প্রশ্ন নয়, যা বলছি শুনতে হবে, জুনিয়রদের ধমক দিয়ে বলে সৌরভ। পুলিশকে কী বলতে হবে, ছাত্রদের বয়ান ঠিক করে দেয় সৌরভ। ধৃত নাসিম আখতারকে হাসপাতালের পরিস্থিতি জানতে পাঠায় সৌরভ চৌধুরী'। সৌরভের শেখানো বুলি পুলিশের জেরায় বলছে ধৃতরা, বলেই খবর সূত্রের। গত ৯ অগাস্ট রাত ১১.৪৫-এ পড়ে যায় ছাত্রটি।


আপাতত পুলিশের  স্ক্যানারে মৃত পড়ুয়া ও ধৃতদের মোবাইল ফোন। মৃত্যুর আগে র‍্যাগিংয়ের কথা কি কাউকে মেসেজ বা হোয়াটসঅ্যাপে জানিয়েছিলেন ওই পড়ুয়া ? করে থাকলে সেই মেসেজ বা হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট (WhatsApp Chat) কি ডিলিট করে দেয় অভিযুক্তরা ? ঘটনার পর নিজেদের মধ্যে কী কোনও তথ্য আদানপ্রদান করে অভিযুক্তরা ? জানতে মৃত পড়ুয়া ও ধৃতদের মোবাইল ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষা করছে পুলিশ। সহযোগিতা নেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক টিমের, দাবি সূত্রর।


পুলিশ সূত্রে দাবি, ছাত্র-মৃত্য়ুর তদন্তেও ষড়যন্ত্রের (Conspiracy) যে চাঞ্চল্য়কর তথ্য় উঠে এসেছে, তাতে গোটা বিষয়টা পড়ুয়া নয়, অপরাধীদের কাজ বলে মনে হতে বাধ্য়। পুলিশ সূত্রে দাবি, শুরুতে মনে হচ্ছিল, ষড়যন্ত্র হয়েছে কেবল পড়ুয়া-মৃত্য়ুর পরে। গোটা ঘটনা চাপা দিতে। কিন্তু, তদন্ত এগোতেই স্পষ্ট হয়ে যায়। এক দফায় নয়, ষড়যন্ত্র হয়েছিল দু'দফায় ! পড়ুয়ার মৃত্যুর আগে ও পরে।


আর সেই ষড়যন্ত্রের চিত্রনাট্যের ছিল তিনটি অঙ্ক। দখলদারি, ভয় ও র‍্যাগিং। পুলিশ (Police) সূত্রে দাবি, গত বুধবার ওই ছাত্রের মৃত্য়ুর আগে থেকেই অন্য় ষড়যন্ত্র শুরু করেছিল সিনিয়র পড়ুয়াদের একাংশ। যার উদ্দেশ্য় ছিল, মৃত পড়ুয়ার বিভাগে অন্য একটি ছাত্র সংগঠনের আধিপত্য খর্ব করা। সংশ্লিষ্ট বিভাগে অধিকার কায়েমের জন্য তারা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চাইছিল। আর সেই ভয়ের পরিবেশ তৈরির অস্ত্রই ছিল র‍্যাগিং।


এদিকে, যাদবপুরকাণ্ডে আরও গ্রেফতার, এবার জালে আরেক প্রাক্তনী ! পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার জয়দীপ ঘোষ
যাদবপুরের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিভাগের প্রাক্তনী জয়দীপ। গেট বন্ধ করে হস্টেলে পুলিশকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার মামলায় গ্রেফতার । কর্তব্যরত পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা। ৯ অগাস্টের রাতে ৩তলা থেকে ছাত্রের পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে যায় পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের মেন গেট বন্ধ থাকায় ভিতরে ঢুকতেই পারেনি পুলিশ ! হস্টেলে ঢুকতে বাধা, পরে ট্যাক্সি অনুসরণ করে হাসপাতালে পৌঁছয় পুলিশ। 


আরও পড়ুন- পুলিশ ভ্যান থেকে অশালীন ইঙ্গিত যাদবপুরকাণ্ডে ধৃতের ! কী প্রতিক্রিয়া মনোবিদদের ?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial