আবির দত্ত, পার্থপ্রতিম ঘোষ, হিন্দোল দে, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: সাত দিন আগেই ভর্তি হয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ( Jadavpur University ) । ৩দিন ক্লাসও করেছেন। তারপরই নিভে গেছে স্বপ্ন-দীপ। ইতিমধ্যেই সৌরভ চৌধুরী নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশ করে গেলেও তিনি হস্টেলেই থাকতেন। স্বপ্নদীপের বাবার মুখে বারবার উঠে এসেছে এই সৌরভের নাম। তিনি সরাসরি সৌরভের বিরুদ্ধে তাঁর ছেলেকে হেনস্থা করার অভিযোগ তুলেছেন। তদন্তে নেমে এই সৌরভকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রর রহস্যমৃত্যুকাণ্ডে বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করা হয়। তারপর থেকে দফায় দফায় চলে জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশের তদন্তে উঠে আসছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরে তিনদিনে দু’বার হস্টেলে নিজেকে সিনিয়রদের কাছে পরিচয় করাতে হয়েছিল স্বপ্নদীপকে। কী ঘটেছিল সেই আলাপ পর্বে? কারা ছিল প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার পরিচয়-পর্বে? এমন কী ঘটেছিল, যার পরিণতি এত মর্মান্তিক ও ভয়ঙ্কর হল?
আরও পড়ুন :
'দুই তিন রাত হস্টেল আমার কাছে বিভীষিকার জন্ম দিয়েছে', ছাত্রদের মুখে সেই দিনগুলোর ভয়াবহতা
সূত্রের খবর, স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যুর ঘটনায় এমন নানা প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত ধৃত প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরীকে জেরা করে পুলিশ। কর্তৃপক্ষের ভূমিকা কী ছিল, তা জানতে আজও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা। পুলিশ সূত্রে খবর, স্বপ্নদীপকে যাঁরা পরিচয় দেওয়ার নামে উত্যক্ত করেছিলেন, তাঁদের নেতৃত্ব দেন সৌরভ। তবে তিনি একা নন, ওই দলে ছিলেন আরও কয়েকজন। পুলিশ জানতে পেরেছে, হস্টেলে রীতিমতো প্রভাবশালী ছিলেন ২০২২-এর অঙ্কে স্নাতকোত্তর পাশ করা সৌরভ। ঘটনার দিন কারা সৌরভের সঙ্গে ছিলেন, স্বপ্নদীপের মৃত্যুর নেপথ্যে তাঁদের কী ভূমিকা, সবটাই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। স্বপ্নদীপের সহপাঠীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।
সৌরভের সম্পর্কে কার্যত গর্জে উঠেছেন শোকসন্তপ্ত স্বপ্নদীপের বাবা। রামপ্রসাদ কুণ্ডু বলছেন, হয়ত রাজনৈতিকভাবে তাঁকে অপদস্থ করার প্রবণতা ছিল। স্বপ্নদীপকে চুল ছোট করে কেটে ফেলতে বলা হয়েছিল। এ বলেছিল, দাদাভাই, আমি তো জন্মদিনে কোনওদিন চুল কাটিনি ... সোমবার ওর জন্মদিন। তাই ও অনুরোধ করেছিল। ' তিনি আরও বলেন, 'সব কথাই হত ওই সৌরভের সঙ্গে। ওই ওইখানকার পাণ্ডা'।