জলপাইগুড়ি : জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে জ্বরের প্রকোপ, ৭০ জনের লেপ্টোস্পাইরোসিস ! ৯১ জনের নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ৭০ জনের লেপ্টোস্পাইরোসিস পজিটিভ এসেছে। লেপ্টোস্পাইরোসিস মূলত ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ যা কিনা ইঁদুরের প্রস্রাব থেকে ছড়ায়।

আরও পড়ুন, জেলাশাসকের সামনেই DFO-কে ধমক তৃণমূল বিধায়কের! ভিডিও পোস্ট করে শাসক দলকে নিশানা শুভেন্দুর

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, 'লেপ্টোস্পাইরা' ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এই রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত হলে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর, মাথাব্যথা, গা-হাত-পা ব্যথা হতে পারে। শরীর থেকে রক্তপাত, পেশিতে ব্যথা, চোখ লাল হতে পারে। বমি বা কোনও ক্ষেত্রে জন্ডিসেও আক্রান্ত হতে পারেন রোগী। কিডনি, লিভারে প্রভাব ফেলে।' অপরদিকে, রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটার চেকরমারিতে বেশ কিছুদিন ধরে জ্বরের প্রকোপ। এখনও রাজগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি বেশ কয়েকজন। জ্বরের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পরই সতর্ক স্বাস্থ্য দফতর। 

প্রসঙ্গত, মশা নিয়ে এবার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে গোটা রাজ্যে। আশঙ্কা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টও। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০ দিনে, রাজ্যের ১৬টি জেলায়, নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৬৩৩। ২৪ জুন পর্যন্ত যেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৬১। ১৩ অগাস্ট তা-ই বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ৩৯৪। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রাজ্যের ১৬ টি জেলায় বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। উত্তরবঙ্গের মধ্যে একমাত্র জেলা মালদা বাদে বাকি ১৫টি জেলাই দক্ষিণবঙ্গের।

গত এক মাসে, মেঘ-বৃষ্টির খামখেয়ালিপনায় রাজ্য জুড়ে জায়গায় জায়গায় জমছে জল, আর তাতেই জন্মাচ্ছে ডেঙ্গির মশার লার্ভা। গত বৃহস্পতিবার, মৃত্যু হয়েছে বেহালার পর্ণশ্রীর বাসিন্দা এক ডেঙ্গি আক্রান্তের। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্য়ুর কারণ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে ডেঙ্গির।উদ্বেগের বিষয় হল, চিকিৎসক মহলের একাংশের দাবি, আক্রান্তদের বেশিরভাগই ভুগছেন টাইপ টু ডেঙ্গিতে।যা অন্যান্য সেরোটাইপের তুলনায় বেশি মারাত্মক। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ  কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেছেন,'বেশিরভাগই হচ্ছে ডেঙ্গি টাইপ টু। এটা কিন্তু আশঙ্কার। এটা বেশি ছড়ায়।'

স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হন ৬৭ হাজার ২৭১ জন। ২০২৩ সালে রাজ্য়ে ডেঙ্গি সংক্রমণ ভেঙে দেয় ১২ বছরের রেকর্ড। ওই বছর রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্ত হন প্রায় ১ লক্ষ ৭ হাজার জন। তার পরের বছর আক্রান্ত হন ৩১ হাজার ১০০ জন। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ  সংযুক্তা দে বলেন,ডেঙ্গি যাদের হচ্ছে হাই গ্রেড ফিবার নিয়ে আসছে। ৩ দিনের বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কোনওভাবেই যেন অ্যান্টিবায়েটিক খেতে না থাকে আগের থেকে সব মিলিয়ে, এখন ডেঙ্গিকে কীভাবে বাগে আনা যায়, সেই চেষ্টাই চলছে রাজ্য জুড়ে।