ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : কলকাতায় ফের ডেঙ্গি (Dengue) আক্রান্তের মৃত্যু । ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বাংলাদেশি মহিলার (Bangladeshi Lady)। মৃতের নাম শিপ্রা দাস( ৫৮)। মস্তিস্কে টিউমারের (Brain Tumour) চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। তিন দিন আগে ঢাকুরিয়া আমরিতে (Dhakuria AMRI) জ্বর নিয়ে ভর্তি করা হয় শিপ্রাকে। আজ সকালে মৃত্যু হয় বাংলাদেশের এই নাগরিকের।
কিন্তু, কেন এই ডেঙ্গির দাপট ?
আবহাওয়ার (Weather) খামখেয়ালিপনা, সঙ্গে অপরিকল্পিত নগরায়ন, এই কারণে বছরের শেষেও ডেঙ্গির দাপট কমছে না। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সেই সঙ্গে তাঁদের পরামর্শ, জ্বর হলেই চিকিৎসকের কাছে যান।
ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, বর্ষার বিদায় এবং শীত আসার সময়। কিন্তু, কমার বদলে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গির প্রকোপ ! যা দেখে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসকদের। ডেঙ্গির এই বাড়বাড়ন্তের জন্য আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনার পাশাপাশি, অপরিকল্পিত নগরায়নকেও দায়ী করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
দক্ষিণ থেকে উত্তরবঙ্গ, রাজ্য জুড়েই অবনতি হচ্ছে ডেঙ্গি পরিস্থিতির। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের (Experts) পরামর্শ, জ্বর (Fever), গায়ে র্যাশ, মাথা ব্যথা (Head Ache), চোখের চারপাশে ব্যথা, গাঁটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, খিদে না পাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। নাইসেড সূত্রে খবর (According to NICED), এবার ডেং থ্রি প্রজাতির প্রকোপ বেশি। সেই কারণেই উপসর্গ ও শারীরিক অবনতির গতিপ্রকৃতি নিশ্চিতভাবে বুঝে উঠতে সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসকদের।
রাজ্যে ভয়ঙ্করহারে বাড়ছে মশাবাহিত রোগের প্রকোপ। ডেঙ্গির পাশাপাশি, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ম্যালেরিয়া। কেন্দ্রের পরিসংখ্যান বলছে, ম্যালেরিয়া আক্রান্তে দেশের মধ্যে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এক ডেঙ্গিতে রক্ষে নেই, ম্যালেরিয়া দোসর। রাজ্যে ডেঙ্গির দাপটের মধ্যেই ম্যালেরিয়ার বাড়বাড়ন্ত। অনেকক্ষেত্রে আবার একই সঙ্গে হচ্ছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া ! বর্তমানে বেলেঘাটা আইডিতে বেশ কয়েকজন ভর্তি রয়েছেন, যাঁদের একই সঙ্গে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া-দুইই হয়েছে।
এদিকে ম্যালেরিয়ার পরিসংখ্যান পাঠানো হলেও, রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রকে ডেঙ্গি রিপোর্ট না পাঠানোর অভিযোগে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের পর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এবং মৃতের কোন তথ্য কেন্দ্র সরকারকে পাঠায়নি রাজ্য। স্বাস্থ্য মন্ত্রককে রাজ্যের তরফে শেষ ডেঙ্গি তথ্য দেওয়া হয়েছিল এপ্রিলে। তখন রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৩৯। বর্তমানে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজারে। এ প্রসঙ্গে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "বাড়ছে ঠিক কথা। কারণ, আরব সাগরের নিচের দেশগুলোয় ডেঙ্গির প্রবণতা বেশি। দক্ষিণ ভারতেও। মানুষকে সচেতন হতে হবে।"
আরও পড়ুন ; 'রাজ্য সরকার ছুটি কাটাচ্ছে, সেইজন্যই ভয়ঙ্কর ডেঙ্গি পরিস্থিতি', কটাক্ষ শুভেন্দুর