অর্ণব মুখোপাধ্যায়, সঞ্চয়ন মিত্র, সন্দীপ সরকার, কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বাড়ি থেকে মেরেকেটে সাড়ে চারশো থেকে পাঁচশো মিটার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) বাড়ি থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো মিটার। আর সেখানেই নিজের ফ্ল্যাটের মধ্যেই খুন হয়ে গেলেন গুজরাতি দম্পতি। ভবানীপুরের জোড়া খুন নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও (Bhowanipoire Twin Murder)।


রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের বাড়ির অনতিদূরে নৃশংস খুন


শহরের হাইসিকিওরিটি জোন হিসেবেই পরিচিত ভবানীপুর (Kolkata News)। আর সেখানেই কিনা দিনে-দুপুরে খুন! রক্তাক্ত-গুলবিদ্ধ দেহ উদ্ধার দম্পতির! বিষয়টি সামনে আসার পর থেকে ধাতস্থ হতে পারছেন না কেউই। দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় বাস করছেন যাঁরা, তাঁরাও হতভম্ব। তথাকিত অভিজাত পাড়ায় এমন ঘটনা ঘটবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সকলে 


শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ভবানীপুর। মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র। স্থানীয় কাউন্সিলর মুখ্যমন্ত্রীর ভাতৃবধূই কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এহেন হাইপ্রোফাইল-অভিজাত এলাকায়, দুপুর বেলা গুলি করে, কুপিয়ে, হাড় হিম করা এই জোড়া হত্যাকাণ্ড রাজ্যজুড়ে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে।


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee : 'আমি বলি ক্ষমতা থাকলে আমার বুকে বন্দুক ঠেকাও' হুঙ্কার মুখ্যমন্ত্রীর


সংবাদমাধ্যমের সামনে তাই উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে স্থানীয়দের। তাঁদের বক্তব্য, "এখানেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি, অভিষেকের বাড়ি। তার পরেও এমন ঘটনা ঘটে গেল! সত্যিই ভয় করছে।" ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় বলে, "আমাদের এলাকা খুবই শান্তিপূর্ণ এলাকা। কী করে হল ভাবতে পারছি না। মুখ্যমন্ত্রী দম্পতির ছোট মেয়েকে ফোন করেছেন।"


ভবানীপুরের যে বাড়িতে এই ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেখান থেকে থেকে ভবানীপুর তথা কালীঘাট থানার দূরত্ব সাড়ে ৫০০ থেকে ৯০০ মিটারের মধ্যে। ওই এলাকাতেই থাকেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র, তৃণমূলের আইনজীবী তথা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই সেখানে প্রায় সারা ক্ষণই নিরাপত্তার ঘেরাটোপ,পুলিশের গাড়ির যাতায়াত চোখে পড়ে। সেখানে এমন ঘটনায় আক্রমণাত্মক বিরোধীরাও। 


রাজ্যকে কড়া আক্রমণ বিরোধীদের


বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এ দিন বলেন, "রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা মুখ্যমন্ত্রীর হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। কোনও অপরাধের বিচার সঙ্গে সঙ্গে না হওয়ার জন্যেই এমন পরিণতি। যাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে নিজেদের নিরাপদ মনে করেন, তাঁদের এই অবস্থা হলে গ্রাম বাংলার অবস্থা কী? এই ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার এবং কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া উচিত।" এখনও অবধি এই জোড়া হত্যাকাণ্ডে কেউ গ্রেফতার হয়নি।