রুমা পাল ও শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা : SSC দুর্নীতিকাণ্ডের প্রতিবাদে হাজরা মোড়ে বিজেপির বিক্ষোভ ঘিরে ধুন্ধুমার। কর্মসূচি শুরুর আগেই সুকান্ত মজুমদারকে রীতিমতো হাইজ্যাক করে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বলে গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ। বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে। বিজেপির দাবি, সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Mazumdar)-সহ ৩০ জন নেতা, কর্মীকে আটক করা হয়েছে। অন্যদিকে, হাজরা মোড়ে বিক্ষোভস্থলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি বেধে যায় কলকাতা পুলিশের কর্মীদের।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি হাজরা মোড়ে পৌঁছনোর পরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তিনি কার্যত গাড়ি থেকেই 'চোর ধরো, জেল ভরো' পোস্টার বের করে দেখাতে থাকেন। তিনি গাড়ি থেকে নামার চেষ্টা করলেও পুলিশ তাঁকে বাধা দেয়। গাড়ি থেকে নামার চেষ্টা করেও বাধা পেয়ে কার্যত গাড়ির বনেটে দাঁড়িয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'পুলিশ তৃণমূল কংগ্রেসের দলদাসের মতো আচরণ করছে।' পুলিশে পুলিশে আগে থেকেই গোটা এলাকা ছয়লাপ ছিল। গাড়ি থেকে রসুকান্ত মজুমদার সহ বাকিদের নামতে না দিয়ে তাদের লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয় বলেই গেরুয়া শিবিরের পক্ষে অভিযোগ। যেখানে যাওয়ার পথে বিস্ফোরক সুরে সুকান্ত মজুমদারের সংযোজন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টাকা চুরি করেছেন।'
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই ক্রমাগত রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি সহ বিরোধীরা। গতকাল শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা এলাকায় 'চোর ধরো জেল ভরো' ব্যানার লাগিয়ে মিছিল করেছিল গেরুয়া শিবির। সেই মিছিল যাওয়ার পথে রাস্তায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধায়কের কার্যালয়ে গঙ্গাজলও ছেটায়।
প্রসঙ্গত, SSC কাণ্ডের প্রতিবাদে এদিন কংগ্রেসের পক্ষেও মিছিল করা হয়। অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রদেশ কংগ্রেস দফতর থেকে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেল পর্যন্ত মিছিল কংগ্রেস কর্মীদের।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব, তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে অপসারণ ও দল থেকে সাপপেন্ড করার পর সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ শানিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, 'পার্থ চট্টোপাধ্যায় একা এই কাজ করতে পারে না। পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে বলির পাঁঠা করা হল'। বৃহস্পতিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অপসারণের ইস্যুতে এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। পার্থর দুর্নীতির ইস্যুতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই (Mamata Banerjee) নিশানা করেছেন সুকান্ত। এদিন কার্যত নাম নিয়েই বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন 'এটার সঙ্গে পুরো সরকার জড়িত। মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। আবার ভোট হবে। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা বাংলা শাসন করবে। একা পার্থ জড়িত হতে পারে না। মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইন্ধনে জেলায় জেলায় তৃণমূলের নেতারা লিস্ট পাঠিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীই নাম পাঠাতে বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কেন গ্রেফতার করা হবে না? সব চোরগুলোকে জেলে পাঠাতে হবে'।'
আরও পড়ুন- 'অপা' অর্পিতারই, শান্তিনিকেতনের বাড়ির মালিকানা পার্থ ঘনিষ্ঠেরই, একসঙ্গে কিনেছিলেন জমি?