কলকাতা: উৎসবের আবহে অতিমারির (Pandemic) পাহারায় ছিলেন তাঁরা। এ বার সেই কলকাতা পুলিশের অন্দরেই (Kolkata Police) করোনার (COVID-19) হানা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কলকাতা পুলিশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২১। এ দিন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৭ জন পুলিশকর্মী। তাতেই একলাফে ১০০ পেরিয়ে গিয়েছে সংক্রমণ। 


শহর কলকাতার মোড়ে মোড়ে এই মুহূর্তে মোতায়েন রয়েছে কলকাতা পুলিশের কর্মীরা। নাগরিকরা মাস্ক পরেছেন কি না, সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় থাকছে কি না এবং রাত্রিকালীন কার্ফু ঠিকঠাক পালন হচ্ছে কি না, সব তদারকি করছেন তাঁরা।  আর তা করতে গিয়েই অতিমারির ধাক্কা থেকে নিস্তার পাচ্ছেন না তাঁরা। 


সোমবার রাত পর্যন্ত কলকাতা পুলিশে করোনা অক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮৩। এর মধ্যে ৪৫ জন ছিলেন নিভৃতবাসে। এ দিন আরও ৩৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের ডিসি ডিডি স্পেশাল, পাঁচ জন আইপিএস অফিসারও। এই মুহূর্তে কলকাতা পুলিশের মোট ৮০ জন কর্মী নিভৃতবাসে রয়েছেন। বাকিরা রয়েছেন হাসপাতালে। এমন পরিস্থিতিতে প্রমাদ গুনছে প্রশআসন। কর্তব্য পালনে গেলেও, পুলিশ কর্মীদের সাবধানতা অবলম্বনে জোর দেওয়া হচ্ছে। 


আরও পড়ুন: Coochbehar Covid Rule Break : থিকথিকে ভিড়, কোভিড বিধি উড়িয়ে স্কুলের সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠান তুফানগঞ্জে, হাজির প্রাক্তন মন্ত্রী


বড়দিন এবং বর্ষবরণের পর থেকেই রাজ্যে সংক্রমণ ঊর্ধমুখী। পু্রতি দিন লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। একই সঙ্গে বাড়ছে রোগীমৃত্যুও। মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, তাতে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যের দৈনিক সংক্রণ ৯ হাজার ৭৩-এ এসে ঠেকেছে। মারা গিয়েছেন ১৬ জন। জেলার নিরিখে আবার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কলকাতারই। শহরের দৈনিক সংক্রমণ ৫ হাজার ছুঁইছুঁই। 


উৎসবের আবহে নাগরিকদের অসতর্কতাকেই এই পরিস্থিতির জন্য মূলত দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখনও সতর্ক না হলে আগামী দিনে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সকলে। তাঁদের সাফ কথা, এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাকে করোনার তৃতীয় ঢেউ বলাই যুক্তিযুক্ত।  সবার আগে টিকাকরণ হওয়ায়, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও অনেকটাই কমে এসেছে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের। এই মুহূর্তে তাঁরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ বার কলকাতা পুলিশের অন্দরেও সংক্রমণ ছডিয়ে পড়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন অনেকেই।