কলকাতা: ফের প্রাণ গেল আরও এক শিশুর। বিসি রায় হাসপাতালে আরও ১ শিশুর মৃত্যু। এই নিয়ে রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত বিসি রায় হাসপাতালে ৪ জন শিশুর মৃত্যু। বেসরকারি মতে, শিশুমৃত্য়ুর সংখ্য়া বেড়ে হল ১৩৬। অ্যাডিনো আতঙ্কে কার্যত কাঁটা শিশুর অভিভাবকরা। 


গতকাল রাত থেকে, আজ ভোর ৬টার মধ্যে বিসি রায় শিশু হাসপাতালে (BC Roy Hospital) ৩ শিশুর মৃত্য়ুর খবর আসে। ফের আরও একটি মৃত্যুর খবর এল। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৪৫-এ বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্য়ু হয় চুঁচুড়ার বাসিন্দা, ১১ মাসের শিশুপুত্রের। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশুর জ্বর ও সর্দিকাশি ছিল। এরপর রাত আড়াইটে নাগাদ মৃত্য়ু হয় বনগাঁর বাসিন্দা, দেড় বছরের আরেক শিশুর। আজ ভোর রাতে মৃত্য়ু হয় উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরের ২ বছরের শিশুর। হাসপাতাল সূত্রে খবর, দুই শিশুরই জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সমস্য়া ছিল।


অ্যাডিনো-আতঙ্কের আবহে দিনকয়েক আগে নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে হাসপাতালগুলিকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তারপরও সরকারি হাসপাতালের অবস্থা এতটুকুও পাল্টায়নি বলে অভিযোগ উঠছে। প্রতিদিন সামনে আসছে শিশু মৃত্যুর খবর। তার সঙ্গেই অভিযোগ উঠছে পরিষেবা নিয়েও। 


পরিবারের অভিযোগ:
গতকাল বি সি রায় হাসপাতালে হাওড়ার শ্যামপুর থেকে আসা ৪ বছরের অসুস্থ শিশুকে প্রায় ১০ ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখার অভিযোগ তুলল পরিবার।  পরিবারের দাবি, দুপুর ১২টায় হাসপাতালে আনা হলেও, রাত ১০টা পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক শিশুকে দেখেননি। এমনকি, ভর্তির আগেই ICU নেই বলে বন্ডে সই করিয়ে নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরিবারের দাবি, এরপর শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়। পরিবারের প্রশ্ন, তাহলে প্রথমে কেন আইসিইউ বেডের সঙ্কট রয়েছে বলে জানানো হয়েছিল? শিশুর পরিবারের আরও দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থার্মোমিটার আনতে বলে। নর্মাল নাকি ডিজিটাল থার্মোমিটার, তা নিয়েও চলে টানাপড়েন


বি সি রায় শিশু হাসপাতালের অধ্যক্ষ দিলীপ পাল বলেন, 'বাড়িতে গিয়ে যাতে তাপমাত্রা দেখতে পারে তাই বাচ্চার মাকে শেখানোর জন্য থার্মোমিটার কিনতে বলা হয়।'


আরও সমস্যা:
এই বি সি রায় হাসপাতালেই আরেক ধরনের সমস্যায় পড়েছে রাজারহাটের এক পরিবার। সুস্থ হওয়ার পরেও শিশুকে ফেরত পেতে দেখা দিয়েছে জটিলতা। 


পরিবারের দাবি, জন্মের পর ওই শিশু বড় হচ্ছে আত্মীয়ের বাড়িতে। সম্প্রতি ১১ মাসের অসুস্থ শিশুকে বি সি রায় হাসপাতালে ভর্তি করেন ওই আত্মীয়। পরিবারের দাবি, শিশু সুস্থ হওয়ার পরে তাকে ফেরত দেওয়া নিয়ে শুরু হয়েছে টানাপড়েন। এক আত্মীয় জানাচ্ছেন, সন্তানহীন আত্মীয়ের বাড়িতে বাচ্চাটা বড় হচ্ছে। এখন ফেরত দেওয়ার সময় নিজের বাবা এলেও হাসপাতাল বলছে হোমে পাঠিয়ে দেবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনেই তারা ওই শিশুকে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের হেফাজতে দিতে চেয়েছে। 


আরও পড়ুন: অ্যাডিনো ভাইরাসে শিশুমৃত্যুর প্রতিবাদে বিজেপির অভিযান, করুণাময়ীতেই পুলিশের সঙ্গে বচসা, গ্রেফতার