সন্দীপ সরকার, কলকাতা:  ORS আবিষ্কার করে অসংখ্য কলেরা রোগীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন তিনি। শনিবার গভীর রাতে, প্রয়াত হলেন ORS-এর জনক দিলীপ মহলানবীশ। অ্যাপোলো হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সোমবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।


Oral Rehydration Solution বা ORS। ১৯৭১ সালে যা তৈরি করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন বাঙালি গবেষক-চিকিৎসক দিলীপ মহলানবীশ। রবিবার প্রয়াত হলেন সেই ORS-এর জনক। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।                       


জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, ১ অক্টোবর, ফুসফুসে সংক্রমণজনিত কারণে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রবিবার ভোররাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বাঙালি গবেষক-চিকিৎসকের।                                                                                                            


আরও পড়ুন, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের জন্য তৃণমূল বিধায়কের রিসর্ট সাজছে সরকারি টাকায়! অভিযোগ শুভেন্দুর


সালটা ১৯৭১। বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ উদ্বাস্তু এদেশে আসছেন। সেই সময় এই রাজ্যে মহামারির আকার নেয় কলেরা। তখন বনগাঁয় পাঠানো হয় দিলীপ মহলানবীশকে। একদিকে এত অসুস্থ মানুষ, অন্যদিকে প্রশিক্ষিত চিকিৎসকের অভাব। সেই সময়, তাঁর আবিষ্কারই অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছিল। স্যালাইনের বদলে ওআরএস খাইয়ে কলেরা রোগীকে সুস্থ করার ভাবনার কৃতিত্ব দিলীপ মহলানবীশেরই। বহু দেশ তাঁর কৃতিত্বকে সম্মান জানিয়েছে। 


২০১৭ সালে, তাঁর উপার্জিত অর্থের একটা বড় অংশ তুলে দেন পার্ক সার্কাসের ইন্সস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের হাতে। সেখানেই গবেষক-চিকিৎসক হিসাবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়েছিল।



ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ অধিকর্তা অপূর্ব ঘোষ বলেন, "আমি যখন শিশু হাসপাতালে যোগদান করি, সেই সময় ওঁর নাম জানতাম, শুনেছি। একদিন তো আমাদের সবাইকেই যেতে হবে। উনি যা দিয়ে গেছেন তা আমাদের লাভ। কষ্ট হয়, তবে মানিয়ে তো যেতে হয়।" 


গবেষণার বেশিরভাগটাই তিনি করেছিলেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের একটি ঘরে। কিছুদিন আগে, রাজ্য সরকার তাঁর স্মৃতিবিজড়িত এই হাসপাতালের সভাকক্ষের নামকরণ করেন, দিলীপ মহলানবীশ সভাকক্ষ। 


সোমবার দিলীপ মহলানবীশের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।