জয়ন্ত পাল, হিন্দোল দে: মত্ত অবস্থায় প্রথমে বচসা, তার পর হাতাহাতি। দীর্ঘ দিন ধরে দেখেতে দেখতে দুই বন্ধুর এমন ‘আলাপচারিতা’য় চোখ সয়ে গিয়েছিল স্থানীয়দের। কিন্তু তাতে যে প্রাণহানি ঘটবে তা আঁচ করে উঠতে পারেননি কেউ। রবিবার উল্টোডাঙায় (Ultadanga) এমনই ঘটনা ঘটল। বন্ধুর সঙ্গে বচসা, হাতাহাতি চলাকালীন সংজ্ঞা হারিয়ে পড়ে যান এক ব্যক্তি। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
রবিবার উল্টোডাঙার তেলেঙ্গাবাগানে এই ঘটনা ঘটেছে। মৃত ব্যক্তির নাম লোকনাথ দত্ত। পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি। প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর বন্ধু, পেশায় অটোচালক গোপাল ভাদুড়ির প্রায়শই বচসা বাঁধত। গতকালও মত্ত অবস্থায় বসচায় জড়িয়ে পড়েন দু’জনে। তা থেকে ক্রমশ ধাক্কাধাক্কি এবং মারামারি শুরু হয়। এমন চলাকালীন এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি ভ্যানের উপর আচমকাই লোকনাথকে ধাক্কা মারেন গোপাল। তাতেই সংজ্ঞা হারিয়ে পড়ে যান লোকনাথ।
আচমকা এই ঘটনায় স্থানীয়রা ছুটে আসেন। কিন্তু ডাকাডাকি করেও লোকনাথের সাড়া মেলেনি। তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেন সকলে। তার পর অচৈতন্য লোকনাথকে তুলে আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার হয়। কিন্তু সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। গোপালের ধাক্কাতেই লোকনাথের মৃত্যু হয়েছে কি না, তা যদিও নির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি। লোকনাথের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট এলেই মৃত্যু কারণ স্পষ্ট ভাবে জানা যাবে।
আরও পড়ুন: Kolkata News: বেহালায় আইএনটিইউসি নেতার বাড়িতে হামলা, মারধর স্ত্রীকে, অভিযুক্ত তৃণমূল কাউন্সিলর
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রবিবার দুই বন্ধু লোকনাথ এবং গোপাল একসঙ্গে একটি অনুষ্ঠানবাড়িতেও গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে এলাকার কালীপুজোতেও সামিল হন তাঁরা। গভীর রাত পর্যন্ত পুজো চলছিল। সেই সময়ই আড়াইটে-তিনটে নাগাদ আচমকা বচসা শুরু হয় দু’জনের মধ্যে। তা ধাক্কাধাক্কি-মারামারির আকার নেয় মুহূর্তের মধ্যেই। তা চলাকালীনই বিপত্তি ঘটে যায়।
এই ঘটনায় কেষ্টপুরের বাসিন্দা অভিযুক্ত গোপালকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। কী কারণে বচসা বেঁধেছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। তবে মৃত লোকনাথের পরিবারের দাবি, গোপাল ধাক্কা দেওয়াতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। যে ভ্যানে লোকনাথকে ধাক্কা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ, তার উপর লোকনাথের জুতোজোড়া এখনও রয়েছে।