কলকাতা : ইডি-র নিরপেক্ষতা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা।  "ইডি-কে (Enforcement Directorate) বাধ্য হয়ে তদন্তে ঢুকতে হচ্ছে" বলে আজ মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitharaman)। এপ্রসঙ্গে পাল্টা জবাব দেয় তৃণমূল। দলের তরফে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের খোঁচা, "বিজেপির যেখানে রাজনৈতিকভাবে ঘাটতি আছে, সেখানে ঘাটতি পূরণে ব্যবহার করা হচ্ছে(ইডি-কে)।"


নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে গরু পাচার মামলা...সর্বত্র সক্রিয়তার সঙ্গে তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় এই সংস্থা। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের পর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেছে ইডি। গতকালও নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দেখা গেছে ইডি-র তৎপরতা। সল্টলেক, কৈখালি, বারাসাত, রাজাবাজার, কলেজ স্কোয়ার-সহ ৬টি জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় এই সংস্থা। 


এদিকে, গরু পাচার মামলাতও সক্রিয়তা দেখা গেছে ইডি-র। অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে হেফাজতে পেতে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে আবেদন করেছে ইডি। এর আগে ইডি-র আবেদন খারিজ করে আসানসোলের ভেকেশন কোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় এনফোর্সেমেন্ট ডিরেক্টরেট। হাইকোর্টও ইডি-র আবেদন খারিজ করে। সায়গলকে হেফাজতে পেতে তাই দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের দ্বারস্থ ইডি। গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে আসানসোল জেলে রয়েছেন সায়গল।


ইডি-র উদ্যোগের প্রশংসা-


এই পরিস্থিতিতে আজ ইডি-র নিরপেক্ষতা নিয়ে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ । "ইডি সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা। প্রথমে সিবিআইয়ের মতো কোনও সংস্থা তদন্ত শুরু করছে। তারপর ইডি-কে সেই তদন্তে বাধ্য হয়ে ঢুকতে হচ্ছে। প্রচুর পরিমাণে টাকা, সোনার গয়না উদ্ধার হচ্ছে। যথেষ্ঠ তথ্যপ্রমাণ হাতে থাকার কারণেই ইডি-কে পদক্ষেপ করতে হচ্ছে।" এমনই মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ।


এরই জবাবে কুণাল বলেন, "বিজেপির কোনও নেত্রী তাঁদের কোনও শাখা-সংগঠনের প্রশংসা করবেন, এটা খুব স্বাভাবিক। ইডি সত্যি একটা বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান ছিল। ইডি-র অফিসাররা যথেষ্ট দক্ষ এবং যোগ্য। কিন্তু, বিজেপি তাদের যে রাজনৈতিক উদ্দশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহার করছে, তাতে সারা দেশেই প্রশ্নটা উঠে গেছে। পরিসংখ্যানও বলছে, বিজেপি পরিচালিত রাজ্যে যেখানে যেখানে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সেইখানে ইডি-কে দেখা যাচ্ছে না। যে যে জায়গায় বিজেপি রাজনৈতিকভাবে এগোতে পারছে না, সেখানে ইডি-কে ব্যবহার করা হচ্ছে। তার মানে এই নয় যে, কোনও অন্যায় কাজকে আমি সমর্থন করছি বা আমার দল ডিফেন্ড করছে। যদি কোথাও ভুল থাকে, অন্যায় থাকে, ইডি নিরপেক্ষভাবে ব্যবস্থা নিক। কিন্তু, বিজেপি নেতারা যখন বলে দেন, এরপর অমুকের বাড়ি যাবে, এরপর তমুকের বাড়িতে যাবে, তখন ইডি-সিবিআইয়ের যাঁরা যোগ্য অফিসার আছেন, তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা আছে, সেটায় বিজেপি নিজেরাই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। বিজেপির যেখানে রাজনৈতিকভাবে ঘাটতি আছে, সেই ঘাটতি পূরণে ব্যবহার করা হচ্ছে।"


আরও পড়ুন ; জোকা ইএসআই-তে স্বাস্থ্য পরীক্ষা মানিক ভট্টাচার্যের, ফিরেই জেরার সম্ভাবনা