কলকাতা: মিষ্টিমুখ বলতেই বাঙালির মাথায় আসে রসগোল্লা। ভাল কাজে মিষ্টিমুখ করতে হাঁ করিয়ে মুখে রসগোল্লা পুরে দেন শুভাকাঙ্খীরা। রাজনীতির ময়দানে এবার প্রতিপক্ষকে রসগোল্লা খাওয়াতে উদ্যোগী হলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। বিধানসভা উপনির্বাচনে মানিকতলায় পরাজিত বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকে রসগোল্লার হাঁড়ি পাঠালেন তিনি। (Kunal Ghosh)
শনিবার বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল বেরিয়েছে। শেষ দফায় গণনা চলাকালীনই ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যায়। ৬২ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে যান সুপ্তি। সেই সময়ই কুণাল প্রতিপক্ষ কল্যাণকে মিষ্টিমুখ করানোর ঘোষণা করেন। সুপ্তি যত ভোটে কল্যাণকে হারাবেন, তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে কল্যাণকে মিষ্টিমুখ করাবেন বলে জানান। (Kalyan Chaubey)
ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর দেখা যায়, ৬২ হাজার ৩১২ ভোটে কল্যাণকে হারিয়েছেন সুপ্তি। এর পরই ঘোষণা মতো কল্যাণের বাড়িতে রসগোল্লার হাঁড়ি পাঠান কুণাল। গুনে গুনে ৬৩টি রসগোল্লা ভর্তি হাঁড়ি কিনে আনান কুণাল। সেই হাঁড়ি পাঠিয়ে দেন কল্যাণের বাড়িতে। তৃণমূলের তরফে বিষয়টিকে সৌজন্য হিসেবে দেখানো হলেও, রসে ভরা মিষ্টি রসগোল্লা পাঠিয়ে কুণাল আসলে কল্যাণকে পরাজয়ের তেতো আস্বাদই দিতে চেয়েছেন বলে মত সমালোচকদের।
আরও পড়ুন: Arnab Dam: সোমবার PHD-তে ভর্তি হতে পারেন প্রাক্তন মাওবাদী নেতা অর্ণব, অবশেষে কাটল জট
কুণাল সেই নিয়ে কোনও রাখঢাক করেননি যদিও। দলের কর্মীদের উদ্দেশে ঘোষণা করেন, "উপনির্বাচনে প্রায় ৬৩ হাজার ভোটে জিতেছেন সুপ্তি। কল্যাণ এত কুৎসা করে, মিথ্য়া অভিযোগ করে হেরে গিয়েছেন। আমরাই শুধু আনন্দ করব! হাঁড়িতে ৬৩টি রসগোল্লা আছে। কল্যাণের বাড়িতে পাঠাচ্ছি।" তাঁর এই ঘোষণায় তৃণমূল কর্মীদের হাততালিতে ভরে যায় চারিদিক। কল্যাণের উদ্দেশে সুপ্তি বলেন, "বার বার হেরে যান ভদ্রলোক। আমারও ভাল থাকে না। মন থেকেই বলছি।"
উল্টোডাঙার একটি আবাসনে থাকেন কল্যাণ। সেখানেই রসগোল্লার হাঁড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে খবর। রসগোল্লার হাঁড়ি যদিও পৌঁছে দিয়ে এসেছেন তৃণমূল কর্মীরা, কল্যাণ তা মুখে তুলেছেন কি না, তা যদিও জানা যায়নি। তবে সবুজ আবির মেখে, রসগোল্লার হাঁড়ি সমেত কুণালের ছবি সামনে এসেছে, যা এই মুহূর্তে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে রাজ্য রাজনীতিতে। কারণ ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সাধনের মৃত্যুর পর থেকে বিধায়কহীন ছিল মানিকতলা। কল্যাণের করা মামলার জেরেই সেখানে উপনির্বাচন আটকে ছিল এতদিন। তাই কল্য়াণের বিরুদ্ধে সাধনের স্ত্রীর জয়ে উচ্ছ্বসিত তৃণমূল।
পাশাপাশি, কল্যাণের সঙ্গে গত কয়েক দিন ধরে বাগবিতণ্ডা চলছিল কুণালের। কুণাল বিজেপি-তে আসতে চেয়েছিলেন, পদ্মশিবিরে এসে তৃণমূল নেতৃত্বকে আক্রমণ করতে চেয়েছিলেন বলে সম্প্রতি দাবি করেন কল্যাণ। পাল্টা কুণাল জানান, বিজেপি-তে যাওয়ার কথা কখনও ভাবেনইনি তিনি। আর যেতে চাইলেও কল্যাণের চেয়ে বড় নেতাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে তাঁর। তাঁদেরই বলতে পারতেন। মানিকতলায় কল্যাণের বিরুদ্ধে সুপ্তির জয়ের নেপথ্যে কুণালের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। সেখানে তাঁকে আহ্বায়ক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে সুপ্তির জয়ে কুণালের মুখেও হাসি ফুটেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।