কলকাতা: কুম্ভমেলায় পুণ্যস্নানে গিয়ে পদপিষ্ট হয়েও বরাত জোরে প্রাণে বেঁচেছেন শুক্লা দেবনাথ। আলিপুরদুয়ারের হাসিমারা থেকে একাই গেছিলেন পুণ্য অর্জনে। মহিলার অভিযোগ, পদপিষ্ট হওয়ার পর কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। পুলিশের দেখা মেলেনি। গাছের নীচে রাত কেটেছে। জল-খাবার কিছুই মেলেনি। ফিরবেন কী করে, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। এবিপি আনন্দ-কে প্রয়াগরাজ থেকে ভিডিওকলে নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন শুক্লা দেবনাথ।


সাংবাদিক: শুক্লা দেবী সেদিন রাতে আপনি সেখানে ছিলেন ? অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে যখন বিপর্যয় হয়েছিল ?


শুক্লা দেবনাথ: হ্যাঁ। আমি ছিলাম।পুণ্যস্নান করি। সঙ্গমঘাট থেকে আমি আড়াইটা-তিনটে নাগাদ বের হই। আর ওই লাইনেই আমি পদপৃষ্ঠ হয়ে যাই। আমি একজন বৃদ্ধমাকে বাঁচাতে গিয়ে, পদপিষ্ট হই। ..এরপর আমার উপর আরও ২০ জন পড়ে যায়। এবং ২০ জন পড়ার পর, আধাঘণ্টা ধরে কেউ বাঁচাতে আসেনি। অনেকবার আর্তনাদের পরও তিনি কারও সাহায্য পাননি বলে জানিয়েছেন তিনি।আমি একজন সমাজকর্মী। আমার উপরে যে ২০ জন পড়েছে, তাঁদের প্রাণ আছে কিনা, আমি তাও জানি না। কিন্তু ওই ২০ জনের মধ্যে আমি একজন সাক্ষী, যে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে, আমি বের হয়েছি ওখান থেকে। আমি তো জ্ঞান হারিয়েছিলাম। আমার আর কিছু মনে নেই। ওখানে একজন মেয়ে আমার চোখে মুখে জল দেয়। আমার সারা শরীর আঘাতে আঘাতে ভরা।


মৌনি অমাবস্যা মহাকুম্ভে দ্বিতীয় শাহি স্নানের পুণ্যযোগে ভোর ৫টায় শাহি স্নানের কথা ছিল।  মাঝরাত থেকেই মহাকুম্ভের নানা ঘাটে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় জমিয়েছিলেন। রাত ২টো নাগাদ সঙ্গমের কাছে ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে যায়। তার মধ্যেই অনেকে দৌড়তে শুরু করায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।  মৌনি অমাবস্যায় মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী।


আরও পড়ুন, তারকেশ্বরে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে 'আগ্নেয়াস্ত্র' ! খোদ দেখা গেল TMC নেতার দেহরক্ষীর হাতে..


দুর্ঘটনার পর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে ফোনে ৩ বার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। খোঁজ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা-ও। সকালে যোগী আদিত্যনাথের বাড়িতে বৈঠকে বসেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব, DGP, ADG আইন শৃঙ্খলা, স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রধান সচিব-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ভিড় সামলাতে কোথায় ত্রুটি, দোষী আধিকারিকদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন।