অভিজিৎ চৌধুরী, মালদা: অনলাইন প্রতারণা চক্রের (Online Fraud) শিকার এক ক্যাফের মালিক। মিথ্যা লোনের কথা বলে টাকা পরিশোধের জন্য ক্রমাগত হুমকি। এমনকি প্রাণে মারার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে। ফোন এবং মেসেজের মাধ্যমে বিরক্ত করা হচ্ছে আত্মীয়-স্বজনদেরকেও।



কী অভিযোগ:
মালদার (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় এবং সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে ওই যুবকের পরিবার। তাঁদের অভিযোগ টানা এই হেনস্থার ফলে মানসিক অবসাদের শিকার ওই যুবক অরিজিৎ রায়। পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে গোটা পরিবার। হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকার থানা পাড়ার বাসিন্দা অরিজিৎ। কয়েকদিন আগেই ওই এলাকায় একটি অনলাইন ক্যাফে খুলেছেন ওই যুবক। ৩১ জানুয়ারি ওই যুবক জানতে পারেন, তাঁর আত্মীয়দের কাছে একটি অনলাইন ঋণ প্রদানকারী সংস্থা থেকে বিভিন্ন ফোন এবং মেসেজ আসছে। যেখানে বলা হচ্ছে ওই ব্যক্তি অনলাইনে লোন (Online Loan) নিয়েছিলেন। সেই ঋণ শোধ করার কথা বলা হচ্ছে তার আত্মীয়দের। কয়েকদিন পর থেকে ওই ব্যক্তির কাছে টাকা চেয়ে ফোন এবং মেসেজ আসতে থাকে। 'হুগো লোন' নামে একটি অনলাইন অ্যাপ দাবি করে তাঁকে ৫০০০ টাকা শোধ করতে হবে। হুমকির ভয়ে সেই সময় নাকি ওই ব্যক্তি ৫ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। কিন্তু তাতেও হেনস্থা শেষ হয়নি। পরে ওই অ্যাপের তরফে আরও টাকা দাবি করা হয়। সেই সময় ওই ব্যক্তি হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় গোটা বিষয়টি জানায়। থানা থেকে সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানাতে বলা হয়। তা মেনে পরে মালদা সাইবার ক্রাইম থানাতেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ সেই সময় তাঁকে ফোন নম্বার বদল করার পরামর্শ দেয়। কিন্তু তা আর করা হয়নি ওই ব্যক্তির। তারপরে গত একমাস ফোন এবং মেসেজ বন্ধ ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ফের ক্রমাগত ফোন এবং মেসেজ ফের আসতে শুরু করেছে। ওই একই সংস্থার নাম করে টাকা দাবি করা হচ্ছে। এমনকি ওই ব্যক্তির আধার এবং প্যান কার্ডের ছবিও পাঠানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। আত্মীয়-স্বজনদের নাম করে ফোন এবং মেসেজ করছে। প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এরকম অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ওই পরিবার। 


পরিবারের অভিযোগ:
অরিজিতের মা কৃষ্ণা রায় বলেন, 'আমার ছেলে মানসিক অবসাদে ভুগছে। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত তাঁর কাছে টাকার জন্য হুমকি দিয়ে ফোন এবং মেসেজ আসছে। আমরা কিছু বুঝতে পারছি না। পুলিশ এই নিয়ে ঠিক ভাবে তদন্ত করুক।'


অভিযোগকারী বলেন, 'আমি এর আগে ভয়ে পাঁচ হাজার টাকা ওদেরকে দিয়েছি। তারপরেও বারবার টাকার দাবি করছে। আমি আমার আত্মীয়স্বজনদের চোখে খারাপ হচ্ছি। আমার মনে হয় আমার ফোন হ্যাক হয়েছে। আমার পরিবার পরিজনের নম্বার ওরা পেয়ে গেছে। আমার আধার কার্ড এবং প্যান কার্ডের ছবি পেয়ে গেছে।'


এই মুহূর্তে অনলাইনে বিভিন্ন লোন প্রদানকারী অ্যাপ রয়েছে। যাদের মধ্যে বেশির ভাগ অ্যাপ প্রতারণা করে। ঋণ নিয়ে নিলে তারপর টাকা চেয়ে চাপ দিতে থাকে। এমন ঘটনা এর আগেও দেখা গিয়েছে। এধরনের বিভিন্ন অ্য়াপ নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপও করা হয়েছে।


আরও পড়ুন: পুকুরের জল থেকে উদ্ধার কয়েক কোটির টাকা মূল্যের সোনার বিস্কুট