করুণাময় সিংহ, ইংরেজবাজার: মালদার (Malda) ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতির মহাকালী পুজো (Kali Puja 2021)। দেবী এখানে দশভূজা। প্রাচীন রীতি মেনে আজও হয়ে আসছে বিপ্লবীদের হাতে চালু হওয়া এই পুজো।

Continues below advertisement


১৯৩০ সাল, দেশজুড়ে তখন ব্রিটিশদের রাজত্ব। পরাধীনতার সেই শৃঙ্খল থেকে দেশকে মুক্ত করার স্বপ্ন নিয়ে প্রতিদিন লড়াই করছেন বিপ্লবীরা। মালদার বাতাসেও তখন বিপ্লবের গন্ধ। কথিত আছে, ইংরেজদের সঙ্গে লড়ার শক্তি ও সাহস সঞ্চয় করতেই শুরু হয় শক্তির আরাধনা। মালদার পুড়াটুলিতে দশ মাথা মহাকালীর আরাধনা শুরু করেন কয়েকজন বিপ্লবী। পরবর্তীতে, ১৯৮৫ সালে ইংরেজবাজারে গঙ্গাবাগে মন্দির তৈরি করে পাকাপাকিভাবে শুরু হয় মাতৃ আরাধনা।


এই পুজোর পরতে পরতে জড়িয়ে আছে স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস। ব্রিটিশ সরকারের আমল থেকে শুরু হওয়া সেই পুজো এখন পরিচিত ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতির মহাকালীর পুজো হিসাবে। একমাথা নন, দেবী এখানে পূজিতা হন দশমাথা মহাকালী রূপে। প্রতিমাশিল্পী অষ্টম পাল বলেন, শুধু ১০ মাথাই নয়, দেবীর  ১০ হাত ও ১০ পা আছে। পাশাপাশি ঠাকুরের পায়ের নীচে শিব থাকেন না। পায়ের তলায় থাকে অসুরের কাটা মুন্ডু। প্রতিহাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র।


এই পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, এখানে অমাবস্যার পরিবর্তে তান্ত্রিক মতে মায়ের পুজো হয় কৃষ্ণা চতুর্দশীতে। এখনও চালু রয়েছে বলিপ্রথা। ইংরেজবাজার ব্যায়াম সমিতির সম্পাদক পাপান চৌধুরী বলেন, প্রথম থেকেই এই পুজো প্রথমে অমাবস্যার পরিবর্তে চতুর্দশী তিথিতে অনুষ্ঠান ও পুজো হয়ে আসছে। পাঠা বলি দিয়ে রক্ত উৎসর্গের মাধ্যমে পুজো শুরু হয়। বলির শেষে শোল মাছের টক রান্না করে দেওয়া হয় মাকে। চতুর্দশীর সকালে মৃৎশিল্পীর ঘর থেকে শোভাযাত্রা সহকারে মন্দির পর্যন্ত মাকে নিয়ে যাওয়া হয়। পুজোয় ৫ দিন ধরে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শেষের দিন হয় নরনারায়ণ সেবা।


আরও পড়ুন: Kali Puja 2021: এলইডি-মোমবাতিকে টক্করে দিতে বাজারে হাজির দিওয়ালি পুতুল, মেদিনীপুরে তুঙ্গে ব্যস্ততা