করুণাময় সিংহ, মালদা: আবারও মালদার মানিকচকের ভুতনিতে টিনের নৌকা উল্টে জলে ডুবে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। এই নিয়ে চলতি মরশুম মানিকচকে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১০। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার মানিকচকের ভূতনি পুলিনটোলা এলাকায়।
মালদার মানিকচকে এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছেন পরিবারের লোকজন। মৃত ব্যক্তির নাম জিতেন মন্ডল। মৃত্যুকালীন বয়েস হয়েছিল ৩১ বছর।বাড়ি ভুতনীর শ্যামসুন্দর টোলা এলাকায়। ঘটনা সম্পর্কে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে জিতেন তার দুই সন্তানকে নিয়ে টিনের নৌকা করে দোকানের দিকে যাচ্ছিলেন পুলিনটোলা দিয়ে। সেখানেই নৌকা জলের মধ্যে উল্টে যায়। ঘটনাটি স্থানীয় এক ব্যক্তির নজরে আসতেই তড়িঘড়ি নৌকা নিয়ে গিয়ে ছোট ছোট শিশুকে উদ্ধার করা হয়। জিতেন জলের তোড়ে তলিয়ে যায়। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনা স্থলে ছুটে যান ভুতনি থানার পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। দীর্ঘক্ষণের প্রচেষ্টায় জিতেনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজে এবং হাসপাতালে পাঠায় মানিকচক থানার পুলিশ। বাড়ির একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবারের লোকজন।
মালদার মানিকচকে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা। নেপালের কোশি ও গন্ডক নদীর জল ছাড়ায়, সেই জল বিহার হয়ে বাংলায় ঢুকতে শুরু করবে। ফলে মানিকচকের ভূতনি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকা ফের প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। গতকাল রাত থেকেই মাইকে প্রচার করছে প্রশাসন। মাসদেড়েক আগে গঙ্গার রিং বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে ভূতনি। জলবন্দি হয়ে আছেন প্রায় এক লক্ষ মানুষ। প্রশাসনের তরফে ৩০টিরও বেশি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। গত দেড়মাসে মানিকচকে বন্যায় প্রাণ গিয়েছে ৯ জনের। রতুয়ার মহানন্দ টোলা ও বিলাইমারি এলাকাতেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা।
আরও পড়ুন, রাজ্যের ৭ জেলায় হলুদ সতর্কতা, পুজোর মাসেও ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি কলকাতায় ? আগামীকাল কেমন থাকবে আবহাওয়া ?
মূলত গঙ্গার রিং বাঁধ ভেঙে প্লাবিত মালদার মানিকচকের ভুতনির বিস্তীর্ণ এলাকা। কুড়ি দিন ধরে জলবন্দি প্রায় এক লক্ষ মানুষ। জলের তলায় বেশ কিছু সকুল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ১৫টি ফ্লাড সেন্টার খোলা হয়েছে মালদা জেলা প্রশাসনের তরফে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। ত্রাণ নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ। পর্যাপ্ত ত্রাণ মিলছে না বলে অভিযোগ জলবন্দি সাধারণ মানুষের। এনিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। আজ নৌকায় বানভাসি এলাকা পরিদর্শন করলেন মালদার জেলাশাসক। জলবন্দি মানুষের অভিযোগ অস্বীকার করে পর্যাপ্ত ত্রাণের ব্য়বস্থা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। ২ বছর আগে ভেঙে গিয়েছিল মূল বাঁধ। এরপর প্রশাসনের তরফে রিং বাঁধ দেওয়া হয়। গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১১ অগাস্ট রিং বাঁধও ভেঙে যায়।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।