উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, এবিপি আনন্দ, কলকাতা: প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে (West Bengal University of Zoology and Fisheries) আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানো সংক্রান্ত বিলও পাস হয়ে গেল বিধানসভায় (West Bengal Assembly)। এই নিয়ে ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) জায়গায় বসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রতিবাদে ওয়াকআউট করলেন বিজেপি বিধায়করা।


ধনকড়ের জায়গায় মমতাকে বসানোর আরও একটি বিল পাস 


রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তন আনার পথে আরও এক ধাপ এগোল তৃণমূল সরকার। রাজ্যপাল নন, রাজ্যের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যর আসনে বসানো হোক  মুখ্যমন্ত্রীকে। এই মর্মে সোমবার বিল পাস হয়েছে বিধানসভায়। 


বুধবার পাস হল প্রাণি ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানো সংক্রান্ত বিল।এই নিয়ে ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের জায়গায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বসানো নিয়ে সংশোধনী বিল পাস হল বিধানসভায়। 


বিধানসভা সূত্রে খবর, বিলের ওপর আলোচনার সময় রাজ্য সরকারের সমালোচনায় করে গেরুয়া শিবিরের বিধায়করা প্রশ্ন তোলেন- যাঁর হাতে এত দফতর, সেইসব দফতর সামলানোরই সময় নেই, এতগুলি বিশ্ববিদ্যালয় সামলাবেন কী করে? বিজেপির অভিযোগ, রাজ্যের শিক্ষায় দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি। সেই দুর্নীতিকে আরও বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে। রাজ্যপাল দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন বলেই তৃণমূলের এত সমস্যা। 


তৃণমূল বিধায়করা পাল্টা অভিযোগ করেন, রাজ্যপাল রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলেন। বছরে একবার যান সমাবর্তনে। বাকি কোনও কিছুতে যুক্ত থাকেন না। মুখ্যমন্ত্রী অনেক দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তাই এটাই আজকে দরকার।


আরও পড়ুন: Haldia: চালু হওয়ার ১০ বছরের মধ্যেই ধ্বসংস্তূপে পরিণত ২৮ কোটি টাকার সতীশ সামন্ত ট্রেড সেন্টার


প্রাণিসম্পদ বিকাশমন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, "প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন বিভাগ আগে কী অবস্থায় ছিল এখন মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে কী হয়েছে?" এর পর ভোটাভুটিতে অংশ না নিয়ে বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করেন বিজেপি বিধায়করা। 


এই বিষয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশোধনী বিলটি আলোচনার পরে ভোটের সময় ডাকার পর  গতকালের মতো আজকেও ভোটাভুটিতে গো-হারা হারবেন বলে অংশ নেয়নি। বিরোধী দলনেতাকে বলব, আমরা যখন ৩০ ছিলাম তখন বিভিন্ন বক্তব্য পেশ করেছি। পালিয়ে বেড়াইনি৷ ওনার সেই অভিজ্ঞতা আছে। আগে বিশ্বভারতী থেকে প্রধামন্ত্রীকে সরান।"


বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, "জর্জিয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ের ফলস ডিগ্রি। তিনি হবেন আচার্য? আমরা মানি না। কেন ডক্টরেট ডিগ্রি লিখতে পারেন না উনি? আমরা রাজ্যপালকে অনুরোধ করবো আপনার কাছে তিনটে অপশন আছে। বিলে সই করা। ফেরত পাঠানো। না হলে কেন্দ্রকে পাঠানো। আমাদের সাজেশন, কেন্দ্রকে পাঠান। কোনওদিন এই বিল আর পাস হবে না। যেমন বঙ্গ বিল কোনওদিন পাস হবে না। যেমন বিধান পরিষদের অবস্থা হয়েছে।"


কেন্দ্রকে বিলটি পাঠানোর দাবি শুভেন্দুর


বিধানসভায় পাস হওয়ার পর বিল যাবে রাজ্যপালের কাছে। রাজ্যপাল সই করলে বিল পরিণত হবে আইনে। বিধানসভায় বিল পাস হওয়ার পর, এখন রাজ্যপাল কী করেন, সেদিকেই নজর সব মহলের।