রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: লকআপে যুবককে (custodial death) পিটিয়ে মারার অভিযোগে তুমুল বিক্ষোভ মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) নবগ্রামে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষমেশ টিয়ার গ্যাস (Tear Gas)  চালায় পুলিশ। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে, পরে জানান পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু কী থেকে এমন পরিস্থিতি?


কী ঘটেছিল?
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, চুরির অভিযোগে নবগ্রাম থানায় তুলে যাওয়া হয়েছিল যুবককে। তার পর সেখানেই পিটিয়ে 'খুন' করা হয়। এই নিয়ে নবগ্রাম থানা ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা। ইটবৃষ্টি হয়। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। তবে পরে তারা আশ্বাস দিয়েছে, দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনাচক্রে, শুক্রবারই বেহালার মর্মান্তিক ঘটনার পর তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা। সৌরনীল সরকার নামে এক ৭ বছরের খুদে স্কুলপড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রতিবাদে এদিন তেতে ওঠে বেহালা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানেও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। তাতে আম জনতার ক্ষোভ কমেনি। প্রশ্ন একাধিক। প্রথমত, যেখানে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল সেখানে সকালের দিকে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের যথেষ্ট ব্যবস্থা ছিল না কেন? অভিযোগ, সৌরনীলকে পিষে চলে যাওয়ার পরই চাইলেই ঘাতক গাড়িটিকে ধরতে পারত পুলিশ। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সেটা হল না কেন? এই নিয়ে চৌরাস্তা মোড়ের কাছে তীব্র বিক্ষোভ দেখায়। অগ্নিগর্ভ সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশের ভূমিকা। কাঁদানে গ্য়াসের শেলের আঘাতে গুরুতর জখম হন পথচারী এক মহিলা। সব মিলিয়ে তীব্র সমালোচিত পুলিশ প্রশাসন। তার মধ্যেই মুর্শিদাবাদের এই ঘটনা। তবে পুলিশের মারে মৃত্যুর অভিযোগ আগেও উঠেছে এই রাজ্যে। 


অভিযোগ আগেও...
কয়েক মাস আগে, নরেন্দ্রপুরে পুলিশ হেফাজতে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। এমনকী পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ারও অভিযোগ তুলেছিল পরিবার। পুলিশ সুপারের কাছে নরেন্দ্রপুর থানার তদন্তকারী অফিসার অর্ণব চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিল পরিবার। সূত্রে খবর, টাকা নেওয়া ও পিটিয়ে মারার অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় তদন্ত করা হবে। পরে সেই ঘটনায় এএসআই-কে ক্লোজ করা হয়। তার আগে, লকডাউন চলাকালীন, ২০২০ সালের মার্চে, রাস্তায় বেরোনোর পর পুলিশের লাঠির ঘায়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগে তুমুল হইচই শুরু হয়েছিল। মার্চের এক সন্ধেয় ঘটনাটি ঘটে হাওড়ার সাঁকরাইলের বানিপুর এলাকায়। মৃতের নাম লাল স্বামী। বয়স ছিল ৩২ বছর। মৃতের স্ত্রীর দাবি করেন, সে দিন সন্ধেয় তাঁর স্বামী দুধ কিনতে বেরোন। তখনই রাস্তায় জটলা সরাতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। লাঠির ঘায়ে লাল আহত হন বলে অভিযোগ। স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি সাউথ রাজ মুখোপাধ্যায় অবশ্য লাঠি চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। তাঁর দাবি, মৃত ব্যক্তি অসুস্থ ছিলেন। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।


 


আরও পড়ুন:চাঁদের আরও কাছাকাছি চন্দ্রযান-৩, কক্ষে প্রবেশ কালই