করুণাময় সিংহ, মালদা: খাতায় কলমে শাসক দলের রাজ্যসভা সাংসদ তিনি। জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতিও ছিলেন এক সময়। অথচ মালদা পৌরসভার (Malda News) ডায়েরি থেকে নাম বাদ গেল সেই মৌসম বেনজির নুরের (Mausam Benazir Noor)। পৌরসভার ডায়েরিতে এলাকার বিশিষ্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নামের তালিকা থাকে। এত দিন সেই তালিকার উপর দিকে জ্বলজ্বল করত মৌসমের নাম। কিন্তু নতুন বছরে পুরসভার যে ডায়েরি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তাঁর নামের উল্লেখ নেই কোথাও। তাতে তৃণমূলে (TMC)-র অন্দরেই চর্চা শুরু হয়েছে।

  


এ বছর তৃণমূল পরিচালিত ইংরেজবাজার পৌরসভা (English Bazar Municipal Corporation) যে ডায়েরি প্রকাশ করেছে, তাতে জেলাশাসক থেকে, পুলিশ সুপার, পুরসভার বিভিন্ন দফতর এবং আধিকারিকদের নাম এবং ফোন নম্বরের উল্লেখ রয়েছে। তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বিজেপি-র জনপ্রতিনিধিদেরও নাম-নম্বরের উল্লেখ রয়েছে ডায়েরিতে। বাদ পড়েছেন শুধু মৌসম। তা নিয়েই রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। ওই ঘটনায় অসন্তোষ লুকিয়ে রাখেননি মৌসম নিজেও। এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘কংগ্রেস সাংসদদের নাম পর্যন্ত রয়েছে। অথচ আমার নাম নেই। কেন এমন হল, আমি জানি না।’’


যদিও ছোট্ট ভুলে মৌসমের নাম বাদ পড়ে গিয়েছে বলে সাফাই দিয়েছেন ইংরেজবাজার পৌরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য আশিস কুণ্ডু। পৌরসভার সহ অহ্বায়ক প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘‘সত্যিই অন্যায় হয়েছে।’’ কিন্তু তাতেই বিতর্ক থামছে না। কিন্তু বিজেপি-র দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবেই মৌসমের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এখন বিপাকে পড়ে সাফাই দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।


আরও পড়ুন: South Dum Dum Municipality: পরিবারের সদস্যদের সম্পূর্ণ টিকাকরণ হলে কর ছাড়ের ঘোষণা, অভিনব উদ্যোগ দক্ষিণ দমদম পুরসভার


স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় অসন্তুষ্ট একদা মালদা জেলার রাজনৈতিক পীঠস্থান কৌতুয়ালী বাড়ির সর্বকনিষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব মৌসম। শাসক লের প্রতিনিধি হয়েও ইংরেজবাজার পুর কর্তৃপক্ষের তাঁকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের তালিকায় রাখার  রাখার প্রয়োজন বোধ করলেন না কেন, তা নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছেন তিনি। তবে তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোও বিবৃতি দেননি এখনও পর্যন্ত।


আদ্যোপান্ত কংগ্রেসি পরিবারের মেয়ে মৌসম, ২০১৯ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে তৃণমূলের হাত ধরার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। তাতে সায় না মেলাতেই জোড়াফুলে চলে আসেন মৌসম। সেই থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহধন্যা হয়ে উঠেছেন মৌসম। তাঁর কার্যালয়ে দলনেত্রীর ছবিও শোভা পায়। সেই মৌসমের নাম বাদ যাওয়ায় আলোচনা শুরু হয়েছে দলের অন্দরেও।