কলকাতা: দিল্লি গিয়ে তৃণমূল সম্পর্কে বিস্ফোরক মুকুল রায় (Mukul Roy)। আর তারপর থেকেই দিনভর জল গড়াল অনেকদূর। এই ইস্যুতেই এদিন গোধূলিলগ্নে ট্যুইটে তোপ দাগলেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি এদিন ট্য়ুইটে বলেন, 'মুকুল রায়কে তার বাড়িতেই নির্যাতন করা হয়। অনুশোচনায় তিনি দিল্লি চলে যান। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে ডিপ্রেশনে ছিলেন। তার ছেলে এবং তৃণমূল কংগ্রেস মিলে তাঁর উপর নির্যাতন চালিয়েছে।'
মূলত প্রকৃতই কোন দলে আছেন মুকুল রায় ? বারবার তার মন্তব্যে ঝড় উঠেছিল অতীতে শাসকদলের অন্দরে। সময়টা ২০২১ সাল। পুরনো ঘরে ফিরেছেন ফের তিনি। তখনও গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার হননি অনুব্রত মন্ডল। শান্তিনিকেতন সেবার বাইরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মুকুল রায় বলেছিলেন, 'এই পৌর নির্বাচনে সারা পশ্চিমবাংলায় বিপুলভাবে ভারতীয় জনতা পার্টি জয়ী হবে।' মুকুলের রায়ের এমন বিতর্কিত কথার জাতাকলে তখন 'ধরণী দ্বিধা হও' এক্সপ্রেসন শাসকদলের শীর্ষনের্তৃত্বের।
সেযাত্রায় বাঁচতে পাশ থেকে মুকুল রায়কে ধরিয়ে দিয়ে কেউ একজন বলেছিলেন, 'তৃণমূল হবে'। যদিও তারপরের মন্তব্যটা ছিল আরও বেশি বিতর্কের। মুকুল রায় এরপর বলেছিলেন,' তৃণমূল তো বটেই। ভারতীয় জনতা পার্টি মানেই তৃণমূল।'এমনই আবহে 'বীরভূমের বাঘ'-র মুখে শোনা গিয়েছিল, 'সোডায়াম-পটাশিয়াম নেমে গিয়েছে মুকুলদার' মতো চাঞ্চল্যকর তথ্য। তারপর অনেকজলই গড়িয়েছে। তবে এই দল ছেড়ে প্রথমবার গেরুয়া শিবিরে যাওয়া, আর মাঝে কোভিড অধ্যায়ে একটা বড় মাস্টার স্ট্রোক ছিল শাসকদলের।
মূলত সেসময় প্রথমবার দল ছেড়ে বিজেপি থাকাকালীন অবস্থায়, যে সময় নিজের স্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে কার্যতই ভেঙে পড়েছিলেন মুকুল রায়। এদিকে গেরুয়া শিবিরের তরফে খোঁজ নেওয়ার মাঝেই সেবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি খবর নিয়েছিলেন। আর সেখানেই পুরনো টান শুরু। প্রত্যাবর্তন করেন মুকুল রায়। যদিও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এরপরেই আসে মুকুল রায়ের বিতর্কিত মন্তব্য। কোন দলে তিনি ? এনিয়ে মাঝে কেটে গিয়েছে মাসের পর মাস জল্পনার আলপনা। দুই তরফেই নানা যৌক্তিকতা। এমনই সময় ঠিক লোকসভা নির্বাচনের আগেই এদিন নিজের দল গত অবস্থান নিয়ে স্পষ্ট করলেন মুকুল রায়।
আরও পড়ুন, 'ইয়ে ডর মুঝে আচ্ছা লাগা', মমতাকে পাল্টা শুভেন্দু
এদিন মুকুল রায় বলেন, 'তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের সময় মানসিক অবস্থা ঠিক ছিল না। এখন সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ আছি। কয়েক ঘণ্টার জন্য একটা ঘটনা ঘটেছিল। আত্মীয় বিয়োগে মানসিক চাপে ছিলাম। বিজেপিতে ছিলাম, বিজেপিতে আছি, বিজেপিতেই থাকব। তৃণমূল আর সেই জায়গায় নেই। তৃণমূল যে কাজকর্ম করছে তা বাংলার পক্ষে ভাল নয়। একাধিক নেতা জেলে আছেন, এর খেসারত দিতে হবে। যে দুর্নীতি করেছে, তাঁকেই দায় নিতে হবে। পঞ্চায়েত ভোটে পরিবর্তন চাইব। বাংলায় অসহনীয় অবস্থা, পরিবর্তন চাইছি', মন্তব্য কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়ের।