প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: চাকরি পাওয়ার পর, মাত্র ৬ বছরে সম্পত্তি ছাড়িয়ে গিয়েছে কোটির সীমানা। কামারহাটি পুরসভার (Kamarhati Municipality) অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার তমাল দত্তের সম্পত্তির খতিয়ান দেখে চোখ কপালে উঠেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED) তদন্তকারীদের। গত ৫ অক্টোবর, বাগুইআটির অর্জুনপুরে তাঁর বাড়িতে তল্লাশিতে সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা নগদ মিলেছে। সেগুলি ছাড়াও, প্রায় ১ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা মূল্যের আড়াই কেজি সোনা ও হিরের গয়না মিলেছে। এ ছাড়া, কামারহাটি পুরসভার ওই অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের প্রায় তেরোশো পাতার সম্পত্তি-নথিও মিলেছে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চাঞ্চল্যকর দাবি করল ED।


কেন্দ্রীয় এজেন্সির রিপোর্টে দাবি, ২০১৬ সালে কামারহাটি পুরসভায় অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দেন তমাল দত্ত। তারপর থেকে পুর-নিয়োগ প্রক্রিয়ায় (Municipality Jpb Scam) তিনি সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। পুরসভার একজন অ্যাসিন্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের এই বিপুল সম্পত্তি, বৈভব কীভাবে হল, তাঁর আয়ের উৎস কী, জানতে চায় ED।


কোথায় তল্লাশি:
কামারহাটি পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার তমাল দত্তের বাগুইআটির অর্জুনপুরের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে, সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা নগদ, এবং প্রায় ১৩০০ পাতার সম্পত্তির নথি মিলেছে বলেও দাবি করেছে ইডি। 


এই সম্পত্তি তৈরি করতে, কামারহাটি পুরসভার একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের সময় লেগেছে মাত্র ৬ বছর। ইডির রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬ সালে কামারহাটি পুরসভায় চাকরিতে যোগ দেন তমাল দত্ত। আর তার ৬ বছরের মধ্যেই কার্যত 'সম্পত্তির পাহাড়' তৈরি করেন তিনি। এই অভিযুক্তের সঙ্গে পুর-নিয়োগ প্রক্রিয়ার যোগেরও দাবি করেছে ইডি। পুর-নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন তমাল দত্ত, ইডির দাবি এমনটাই। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, পুরসভার একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কী ভূমিকা থাকতে পারে? 


কয়েকদিন আগেই, পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলা গিয়ে বিস্ফোরক দাবি করে ইডি। এবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের দাবি, তাদের হাতে এসেছে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। এই গ্রুপের মাধ্যমেই পুর নিয়োগে দুর্নীতির প্রধান চক্র চলত। চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা থেকে টাকার লেনদেন,  সবকিছু নিয়েই এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেসেজ চালাচালি হয়েছে বলে দাবি করে তারা। আর এই গ্রুপের নাকি অ্যাডমিন ছিলেন খোদ অয়ন শীল। 


২০১৫ সালে, বালি পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রণব অধিকারীর বাড়ির অন্দরমহল থেকে, উদ্ধার হয় কোটি কোটি টাকা নগদ ও সোনার গয়না। শৌচাগারের কমোড খুলতেই বেরিয়ে আসে সম্পত্তি। কমোডের পিছনের কাঠের বাক্সেও মেলে টাকার বান্ডিল। এবার, কামারহাটি পুরসভার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের বাড়ি থেকে মিলল কেজি কেজি সোনা, নগদ, সম্পত্তির কাগজ। 


আরও পড়ুন: টেট-এ পাকড়াও ভুয়ো পরীক্ষার্থী! বায়োমেট্রিক এড়িয়ে কীভাবে সম্ভব? উঠছে প্রশ্ন