সুজিত মণ্ডল, নদিয়া: এক তৃণমূল নেতার (TMC Leader) বিরুদ্ধে তাঁর পুত্রবধূকে ধর্ষণের চেষ্টার (Attempt to Rape) অভিযোগ উঠল। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই নেতা। তাঁর দাবি, এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। একইসঙ্গে ওই নেতার ছেলের বিরুদ্ধেও স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নদিয়ার (Nadia) হাঁসখালি থানায় শ্বশুর ও স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গৃহবধূ। 


তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে পুত্রবধূকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ-


এই ঘটনায় গৃহবধূ অভিযোগ জানিয়েছেন যে, বছর দশেক আগে প্রমথ রঞ্জন বোস, যিনি রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান, তাঁর ছেলে প্রীতিশ বোসের সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামী। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ১৭ জানুয়ারি শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে তিনি বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন। ফিরে যান বাপের বাড়িতে। যদিও শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের অনুরোধে ফের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে যান ওই গৃহবধূ। অভিযোগ উঠেছে যে, গত ২৩ মে দুপুরে শ্বশুর প্রমথ রঞ্জন বোস আচমকাই ওই গৃহবধূর ঘরে ঢুকে পড়েন এবং তাঁকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেন। কোনওরকমে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। লোকলজ্জার কারণে তিনি বিষয়টি কাউকে না জানালেও ফের বাপেরবাড়িতে ফিরে যান। সুবিচার পেতে হাঁসখালী থানায় ওই গৃহবধূ স্বামী ও শ্বশুরের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, বড় মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজের কাছে নিয়ে আসার পর স্বামী প্রীতিশ বোস গত ১৫ জুন বিকেলে তাঁর বাবার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে মারধর ও গালিগালাজ করেন।


আরও পড়ুন - Nadia News: প্রতিবাদের নামে তাণ্ডব, প্রতিবাদে বেথুয়াডহরিতে ৭২ ঘণ্টা ব্যবসা বন্ধের ডাক


এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্বশুর প্রমথ রঞ্জন বোস। তিনি জানাচ্ছেন, এই সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। রাজনৈতিক চক্রান্ত করে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলছেন, 'গত তিন বছর ধরে পুত্রবধূ আমাদের বাড়িতে থাকেন না। ছেলের সঙ্গে থাকবে না বলে ডিভোর্সের মামলা করেছে। আমি একজন প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে। এর পিছনে বিজেপির মদত রয়েছে।' নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলছেন, 'এই বিষয়ে আমাদের মদত দেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়ষ তৃণমূলের নেতৃত্বস্থানীয় যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের দ্বারা এই ঘটনা বিভিন্ন সময়ে ঘটেছে। এক্ষেত্রে তিনি একজন বয়স্ক মানুষ। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কী করে তাঁর মধ্যে স্পৃহা আসতে পারে জানা নেই। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে, তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) এটাই রেওয়াজ। কারণে অকারণে বিজেপিকে (BJP) দোষ দেওয়া ওদের স্বভাব'। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি-তৃণমূল রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।