সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: তৃণমূল নেতা (TMC) ও রায়গঞ্জের (Raiganj) বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে বয়কট ঘোষণা করলেন তৃণমূল (TMC) পরিচালিত রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি। টেন্ডার ইস্যুতে দুই তৃণমূল নেতার সংঘাতের (TMC Inner Conflict) সুর আরও তীব্র হল। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটমাটের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি (Uttar Dinajpur News)। 


তৃণমূলের দুই নেতার মধ্যে সংঘাত


রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মানস ঘোষ বলেন, "উনি বলেছেন, পঞ্চায়েত সমিতি ঘুঘুর বাসা। উনি ঘুঘু। ঘুঘু হয়ে কখনও বিজেপি হন। কখনও তৃণমূল হন। উনি নিজে কোথায় থাকবেন, তা নিজেই ঠিক করুন। আমরা রায়গঞ্জের বিধায়ককে বয়কট করছি।"


রায়গঞ্জের তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, "উনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত। নিজের গ্রামে ঢুকতে পারেন না। তার সম্বন্ধে কোনও টিপ্পনী করব না।"


রাজনৈতিক সংঘাতে বন্ধ হয়ে যাওয়া রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির তালা খুলল ঠিকই। কিন্তু সংঘাতের সুর একধাক্কায় অনেকটাই চড়ল। রায়গঞ্জের বিধায়ক ও তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ কল্যাণীকে বয়কট ঘোষণা করলেন  তৃণমূল পরিচালিত রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি। 


সম্প্রতি রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতিতে টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগে সরব হন রায়গঞ্জের বিধায়ক। ২৫টি কাজের টেন্ডার নিয়ে গত ২৬ মে কৃষ্ণ কল্যাণীর অফিসে, তাঁর সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যদের তুমুল বাদানুবাদ হয় বলে অভিযোগ। 


আরও পড়ুন: Asish Banerjee: কাটমানি না খেয়ে সৎ থাকার পরামর্শ ডেপুটি স্পিকারের, কটাক্ষ বিজেপি, সিপিএম-এর


ওই ঘটনায় পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যদের পাশে দাঁড়ান হেমতাবাদের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বর্মন। বিধায়ক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের অপমান করেছেন, এই অভিযোগ তুলে গত ২৭ মে অনির্দিষ্টকালের জন্য পঞ্চায়েত সমিতিতে তালা ঝুলিয়ে দেন তৃণমূল সদস্যরাই!  


১৮ দিনের মাথায়, মঙ্গলবার জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের উপস্থিতিতে তালা খোলা হল রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির। আর সেখান থেকেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিধায়ককে বয়কট ঘোষণা করেন পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি। 


মানসের কথায়, "যে বিধায়ককে এখনও বিধানসভায় গিয়ে তৃণমূলের বেঞ্চে না বসে বিজেপির বেঞ্চে বসতে হয় হয়, তার কথায় পঞ্চায়েত সমিতি চলবে এমন কোনও মান নেই। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত স্বায়ত্ব শাসিত ব্যবস্থা। এখানে বিধায়কের পরামর্শ দেওয়ার জায়গা আছে। হুইপ দেওয়ার জায়গা নেই। আমাদের কোনও অনুষ্ঠানে কোনও কর্মসূচিতে রায়গঞ্জের বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানাবে না। বয়কট করছি।"


আলোচনার মাধ্যমে মিটমাটের আশ্বাস


আবার  কৃষ্ণ কল্যাণী  বলেন, "যিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে লড়েছিলেন, সবাই জানে ভোট লুঠ করে জিতেছিলেন, নিজের এলাকায় ঢুকতে পারেন না, তার কথায় টিপ্পনী করব না।"


এই নিয়ে প্রশ্ন করলে বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশন শেষে বিধায়করা জেলায় ফিরলে বিষয়টি মিটমাটের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল। তিনি বলেন, "পঞ্চায়েত সমিতি জনপরিষেবার জায়গা। তাই খুলে দিতে বলেছি। বিধানসভার অধিবেশন চলছে। বিধায়করা নেই। ওরা এলে বিষয়টি নিয়ে বসব।"আলোচনার মাধ্যমে এই সংঘাত মেটে কিনা, সেটাই দেখার।