সমীরণ পাল, রাজীব চৌধুরী, রঞ্জিত হালদার, উত্তর ২৪ পরগনা: নৈহাটিতে রঙের উৎসবে রাজনীতির উত্তাপ। প্রভাতফেরিতে হুঙ্কার তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিকের। বললেন, 'বিরোধীরা টিভির পর্দায় আছেন, মাঠে-ময়দানে নেই। একজন বিরোধীকেও দেখবেন না মানুষের সঙ্গে আছেন।'


কবি লিখেছিলেন, আলোকরসে মাতাল রাতে, বাজিল কার বেণু। দোলের হাওয়া সহসা মাতে, ছড়ায় ফুলরেণু। কিন্তু রাজনীতি সর্বস্ব বাংলাতে দোলের হাওয়াতেও রাজনীতি মিলেমিশে একাকার! দোলের দিনও বিরোধীদের কটাক্ষ ছুড়ে দিলেন ব্য়ারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক। ব্য়ারাকপুর তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক বলেন, বিরোধীরা টিভির পর্দায় আছে, মাঠে ময়দানে নেই। একজনকেও দেখবেন না বাঙালির এই উৎসব পালন করতে মাঠে আসতে, মানুষের সাথে আসতে, কোনও বিরোধী কেউ নেই। 


পাল্টা বালিচুরি, কয়লাচুরি, দুর্নীতিতে , তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতারির প্রসঙ্গ টেনে কটাক্ষ ছুড়ে দিতে দেরি করেনি বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, সরকার নবান্নে আছে। বাকিরা কোথায় থাকবে! আমাদের জায়গা নেই। আমাদের যেখানে জায়গা, সেখানে আছি আমরা। বাকি সব নবান্নে, প্রোমোটারিতে, চুরিতে-বাটপারিতে। বাকি যারা আছি আমরা, মাটিতেই আছি রাস্তাতে আছি দেখে নিন। আমবাগানে দাঁড়িয়ে আছি। গঙ্গার ধারে দাঁড়িয়ে আছি।


বিজেপি নেতা  সজল ঘোষ বলেন, ঠিকই বলেছেন বিরোধীরা প্রেসিডেন্সি জেলে নেই, কাটমানিতে নেই, সিন্ডিকেটে নেই। বিরোধীদের শুধু ৪০ শতাংশ ভোট আছে। হোলি হ্য়ায় ভাই হোলি হ্য়ায়, বুরা না মানো হোলি হ্য়ায়! তবে রাজনীতিবিদরা রং নয়, দোলের দিনও কটাক্ষ ছোড়াছুড়িতে ব্য়স্ত রইলেন। বহু রাজনীতিবিদই আজ দোল খেললেন! রঙিন হলেন। কিন্তু দোলের দিনও তাদের রাজনৈতিক আক্রমণ থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর আবীর খেলার দিকেই তাদের পাখির চোখ।


আরও পড়ুন, আদালতে পার্থর বিরুদ্ধে 'রাজসাক্ষী' এবার তাঁরই জামাই ! 'কীভাবে দুর্নীতি, কোথায় গিয়েছে টাকা..'


অপরদিকে, এই একই দিনে নন্দীগ্রাম দিবস পালিত হয়। সিঙ্গুর প্রসঙ্গ উঠে এল এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মুখে ।  এদিন বিরোধী দলনেতা বলেন, '১৪ মার্চ বদলে দেওয়া যায় না। বশ্যতা বিরোধী সংগ্রামের একটি ঐতিহাসিক দিন। শাসক সংবিধান রক্ষা করার পরিবর্তে যেভাবে তার ক্যাডার এবং পুলিশকে দিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস করেছিল, তার ক্ষত-বিক্ষত এখানে চারিদিকে ছড়িয়ে আছে। ১৪ মার্চের পরের দিন ১৫ মার্চ একটি পুরো পুরুষশূন্য গ্রামের সব মহিলাকে শরীরিকভাবে অত্যাচার করা হয়েছিল। আমরা এই দিনটা পালন করি এবং শ্রদ্ধা জানাই। আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা যে দলই করুন না কেন তাঁদেরও অনুরোধ, আসুন আজকের দিনে সবাই মিলে করুন ...রাজনীতির কোনও জায়গা নেই। কিন্তু, শাসক বদলেছে, ব্যবস্থা বদলায়নি।'