সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: এখনও ভাঙড়ের ঘটনার স্মৃতি টাটকা। যার আঁচ এসে পড়েছিল কলকাতাতেও। অনেক জল ঘোলার পর, সদ্য় কিছুদিন আগেই জেল ছাড়া পেয়েছেন আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি। আর এবার অশোকনগরে নৌশাদের সভার পর গুরুতর অভিযোগ তুলল দলীয় কর্মীরা। পতাকা ছেঁড়ার অভিযোগ ঘিরে বচসা। এবং তা হাতাহাতির আকার নেয় শেষ অবধি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে (Panchayat Election) এবার আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষে (TMC ISF Clash) উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগরে (AshokNagar)। যদিও আইএসএফ-র তরফে অভিযোগের সুর চড়ানো হয়েছে শাসকদলের বিরুদ্ধে।
আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত অশোকনগর থানা অন্তর্গত দীঘরা মালিকবেড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকার চাকসিমলী ৭১ নম্বর বুথ। প্রসঙ্গত, গতকাল অশোকনগর শ্রীকৃষ্ণপুরে উপস্থিত হয়েছিলেন ভাঙ্গরের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি। বিশাল জনসভার মধ্যে শুরু করেছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ। তাতেই আইএসএফ-র কিছু কর্মীরা এলাকায় আইএসএফ-র পতাকা রাখেন। আর সেই পতাকাকে ঘিরেই শুরু হয় উত্তেজনা। অভিযোগ, আইএসএফ-র পতাকা একদল দুষ্কৃতী এসে ছিঁড়ে ফেলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন আইএসএফ-র কর্মীরা। বচসায় জড়িয়ে পড়ে আই এসএফ-র কর্মীরা। ঘটনাচক্রে শুরু হয় হাতাহাতি। আক্রান্ত হন এক আইএসএফ-র কর্মী।
এরপর তড়িঘড়ি স্থানীয় কিছু লোকজন আইএসএফ-র কর্মীকে নিয়ে উপস্থিত হয় অশোকনগর রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে। সেখানেই চলে প্রাথমিক চিকিৎসা। পরবর্তীতে আইএসএফ-র জেলা সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত হন এবং অশোকনগর থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে অশোকনগর থানার অন্তর্গত দীঘরা মালিকবেড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকার চাকসিমলী এলাকায়।
প্রসঙ্গত, ভাঙড়কাণ্ডের পর ৪২ দিন জেলবন্দি থেকে ৪ মার্চ ছাড়া পান আইএসএফ বিধায়ক। আজ ভাঙড়ে পা রাখার পর ফুলের মালা পরিয়ে স্বাগত জানানো হয় নৌশাদ সিদ্দিকিকে। সেই ভাঙড়ে দাঁড়িয়েই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন সেবার ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি। বলেছিলেন, 'শান্তিপূর্ণ ভোট হলে পঞ্চায়েতে শাসককে খুঁজে পাওয়া যাবে না।'
আরও পড়ুন, বন্দুক উঁচিয়ে ঘুরছে কে, ভাইরাল ভিডিওর জেরে প্রশ্নে তৃণমূল কর্মী
অপরদিকে, ভাঙড়ের যে হাতিশালা থেকে গত ২১ জানুয়ারি অশান্তির সূত্রপাত। টেনে হিঁচড়ে নৌশাদকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। জেলমুক্তির পর সেই হাতিশালা থেকেই মিছিল শুরু করেছিলেন নৌশাদ সিদ্দিকি। একদা শক্ত ঘাঁটি, এই ভাঙড়, এখন কার্যত তৃণমূলের গলার কাঁটা। লাগাতার অশান্তি। বিধানসভা ভোটে হার, এসবের নেপথ্য়ে অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে, তৃণমূলের অন্দরে কোন্দলের তত্ত্ব। পাশাপাশি, সম্প্রতি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত সাগরদিঘিতে হার। সবে মিলে চিন্তা বাড়িয়েছে রাজ্য়ের শাসকদলের।