সমীরণ পাল, দেগঙ্গা: দলবেঁধে নেমে এলে উৎপাতে বাড়ি থেকে বেরনোই দায় হয়ে দাঁড়ায় (Monkey)। আবার নাম শুনলেই আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেন বহু মানুষ। কিন্তু মৃত্যুর মুখ থেকে এক বাঁদরকে বাঁচিয়ে নজির গড়লেন দেগঙ্গার (Deganga News) বাসিন্দারা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যখন ছটফট করছে বাঁদরটি, সেই সময় তাঁকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনলেন সকলে। নিয়ে গেলেন হাসপাতালেও।
বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যখন ছটফট করছে বাঁদরটি, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে আনা হল
উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas News) দেগঙ্গার ঘটনা। সেখানকার বেড়াচাঁপাবাসী এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। মঙ্গলবার রাতে এলাকার চৌমাথায় একটি দোকানের সামনে হাজির হয় বাঁদরটি। সেখানে সকলে তাঁকে কলা-বিস্কিটও দেন। নিজের মনে তা খেয়ে যাচ্ছিল বাঁদরটি। কিন্তু এলাকার পথকুকুরের দল আচমকাই তার উপর চড়াও হয়। এলাকা থেকে তাড়াতে তাড়া করতে শুরু করে।
তাতে উপায় না দেখে রাস্তার পাশের বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মারের উপর গিয়ে বসে বাঁদরটি। কিন্তু সেখানে ছিল হাই ভোল্টেজের বিদ্যুতের তার। সেই তারে পা পড়তেই ঘটে যায় অঘটন। তারে পা পড়তেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় বাঁদরটি। কোনও রকমে তারে আটকে ঝুলতে থাকে। সেই অবস্থায় বাঁচার আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে থাকে বাঁদরটি। কিন্তু নিস্তার পাচ্ছিল না।
বিষয়টি চোখে পড়তেই আঁতকে ওঠেন স্থানীয়রা। সঙ্গে সঙ্গে লাঠিসোটা, বাঁশ নিয়ে এককাট্টা হন স্থানীয় দোকানদার এবং এলাকার মানুষ জন। বাঁশের সাহায্যেই বাঁদরটিকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। তাকে নামিয়ে এনে প্রথমে দুধপান করানো হয়। কিন্তু প্রাণে বাঁচলেও হাই ভোল্টেজ তারের সংস্পর্শে এসে ধুঁকছিল বাঁদরটি।
বাঁদরটির অবস্থা অনুধাবন করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন বুঝতে পারেন সকলে। এর পর স্থানীয় তিন-চার জন যুবক মিলে একটি ডেকে আনেন। বাঁদরটিকে সঙ্গে নিয়ে অটোয় চেপে বসেন তাঁরা। রওনা দেন এলাকার প্রাণী হাসপাতালের দিকে। সেখানে তড়িঘড়ি চিকিৎসা করা হয় বাঁদরটির। ফলে প্রাণে বেঁচে যায় বাঁদরটি। সুস্থ হয়ে ওঠে ধীরে ধীরে।
দেগঙ্গায় বাঁদরের প্রাণ বাঁচিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন স্থানীয়রা
মঙ্গলবার রাতের এই ঘটনা মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। গেছোদের উৎপাতে এ যাবৎ অতিষ্ঠ হওয়ার খবর মিলেছে একাধিক জায়গা থেকে। কিন্তু দেগঙ্গার এই ঘটনা তার চেয়ে একেবারেই ব্যাতিক্রম। শুধু উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে বাঁদরটির প্রাণই বাঁচাননি স্থানীয়রা, মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তাঁরা।