সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: এগিয়ে আসছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে উত্তপ্ত দেগঙ্গা (Deganga News)। সেখানে তৃণমূল নেতাকে মারধর করার অভিযোগ। এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। তৃণমূলের (TMC) অভ্যন্তরীণ কলহ প্রকাশ্যে চলে এল বলে মত বিরোধীদের। যদিও তৃণমূলের দাবি, তাদের কর্মীদের মধ্যে কোনও সমস্যা নেই। ঠিকাদার এবং তোলাবাজরাই গুন্ডামি করে এলাকাকে তাতিয়ে তোলার চেষ্টা করছে (Panchayat Elections 2023)।


চাকলা পঞ্চায়েত এলাকার অঞ্চল সভাপতি মিলন দেবনাথকে মারধরের অভিযোগ


উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas News) দেগঙ্গার চাকলা পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। সেখানে চাকলা পঞ্চায়েত এলাকার অঞ্চল সভাপতি মিলন দেবনাথকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, শুক্রবার চাকলা পুলিশ ফাঁড়ির পাশে একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন মিলন। সেই সময় স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের বুথ আহ্বায়ক ফারুখুজ্জামান এবং তৃণমূলের নেতা ইকবাল হোসেন আচমকা তাঁর উপর চড়াও হন। পুলিশের সামনেই বেধড়ক মারধর করা হয় মিলনকে। 


তৃণমূলের স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় মিলনকে। বিশ্বনাথপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেন চিকিৎসকেরা। এর পর দেগঙ্গা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মিলন। কিন্তু অভিযোগ পেলেও, পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার বা তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। তাতে শুক্রবার রাতে চাকলা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ দেখান মিলনের অনুগামীরা। 


আরও পড়ুন: Saktigarh Shootout: দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল রাজুর, মুখ খুলতে পারেন ভেবেই কি গুলি? কয়লা মাফিয়া খুনে হাজারো প্রশ্ন


এই ঘটনায় তৃণমূলকে একহাত নিয়েছেন বিজেপি-র বারাসাত সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তাপস মিত্র। তিনি বলেন, "তৃণমূল তোলাবাজি, দুর্নীতি, কাটমানি এবং সিন্ডিকেট রাজত্বের দল। কাটমানির ভাগ নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই চাকলায় এই ঘটনা ঘটেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে এর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ জবাব দেবেন।"


যদিও দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মফিদুল হক সাহাজি গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, "চাকলার অঞ্চল সভাপতি মিলন দেবনাথ অত্যন্ত ভাল ছেলে। দিদির সুরক্ষা কবচ নিয়ে সক্রিয় ভাবে দলের হয়ে কাজ করছেন। যে বা যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এটা ঠিক কাজ হয়নি। দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, মাথা পেতে নেব।"


হামলাকারীরা তৃণমূলের কেউ নন বলে দাবি করেছেন মিলনও। তিনি জানিয়েছেন, ফারুকুজ্জামান এবং ইকবাল তৃণমূলের কেউ নন। এঁরা ঠিকাদার, তোলাবাজ। গুন্ডামি করে এলাকাকে উত্তপ্ত করে তোলার চেষ্টা করছে। পুলিশ এঁদের গ্রেফতার না করলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দেন মিলন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগও খারিজ করেছেন তিনি।


অভিযুক্ত ইকবালের দাবি, মিলন চাকলার অঞ্চল সভাপতি নন


কিন্তু মিলনের অনুগামীরা চাকলা ফাঁড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পরই সেখানে পাল্টা বিক্ষোভ দেখান ফারুকুজ্জামান এবং ইকবাল। ইকবালের দাবি, মিলন চাকলার অঞ্চল সভাপতি নন। তিনি বিজেপি-র হয়ে দালালি করেন। তাঁর বুথে তৃণমূল সর্বদা পিছিয়ে থাকে। তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন ইকবাল। তাঁর দাবি, মিলনের উপর কেউ হামলা চালায়নি। বরং মিলনই তৃণমূলের নাম করে এলাকায় তোলাবাজি করেন বলেও অভিযোগ তোলেন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনিও।