সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: বর্ষার আগেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে নদীর বাঁধ। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির (Sandeshkhali News) তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কংক্রিটের বাঁধ তৈরির কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় (River Dam), এই বিপত্তি বলে দাবি করেছেন গ্রামবাসীরা। এই নিয়ে তৃণমূলকে (TMC) নিশানা করেছে বিজেপি (BJP)। 


তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে


জলের তোড়ে বাঁধের দেওয়ালে ফাটল। নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বড় বড় কংক্রিটের চাঁই। শনিবার রাতে এমনই ভয়ঙ্কর ভাঙনের সাক্ষী থাকলেন উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas News) সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের আতাপুর মৌজার বাসিন্দারা।


রায়মঙ্গল এবং বড় কলাগাছি নদীর সংযোগস্থলে প্রায় ৩০০ মিটার বাঁধের আর কোনও অস্তিত্বই নেই। এর ফলে মণিপুর, দুর্গামণ্ডপ, কোড়াকাটি, আমতলি-সহ একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রাম ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।


আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee : "কংগ্রেস জিতলেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিজেপিতে চলে যাবে", চাঞ্চল্যকর অভিযোগ অভিষেকের


স্থানীয় বাসিন্দা নমিতা খামারু বলেন, "রাস্তার কোলে থাকি আমরা। যখন তখন ঘরবাড়ি নিয়ে চলে যেতে পারে। রাত ৯টার দিকে বিশাল আওয়াজ। সারা রাত ঘুম নেই। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি।" আর এক বাসিন্দা নরেন্দ্র পাত্র বলেন, "এই জায়গাটা মূলত কংক্রিট বাঁধের এলাকা ছিল। কাজটা সম্পূর্ণ হয়নি। আবার নতুন করে ভাঙছে।"

এতদিন টনক না নড়লেও, স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে তড়িঘড়ি কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। সেচ দফতরের আধিকারিক শান্তনু মণ্ডল বলেন, "আপাতত আমরা যাতে জল না ঢোকে, তার ব্যবস্থা করছি। বেড ইরোশন প্রোটেক্ট করা যায়। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।"


স্থানীয়দের অভিযোগ পেয়ে তড়িঘড়ি কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর


যদিও এ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, তৃণমূলের দুর্নীতিরই এমন পরিণাম। বসিরহাটে বিজেপি-র সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তাপস ঘোষ বলেন, "দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিশ্রুতি শুনে আসছি মুখ্যমন্ত্রীর মুখে। আয়লার টাকা কেন্দ্র দেওয়ার পরও তার পরিণতি কী, এখানে দেখতে পাচ্ছি।" অন্য দিকে, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শিবপ্রসাদ হাজরার বক্তব্য, "কেন্দ্র থেকে কোনও ফান্ড দেয় না। রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়ে প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে।" যদিও নদী বাঁধ নিয়ে রাজনৈতিক তরজায় মন নেই গ্রামবাসীদের। ভিটেমাটি রক্ষা পায় যাতে, সেই প্রার্থনাই করছেন সকলে।