সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর : টিউবয়েল আছে, পাড়ায় পাড়ায় সরকারি জলের কলও আছে। কিন্তু নেই শুধু জল৷  তাই গরম পড়তেই জলকষ্ট শুরু হেমতাবাদ ব্লকের বাঙালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায়। এই সমস্যা নতুন নয়। প্রতি বছর অসহনীয় জলকষ্ট ভোগ করা একপ্রকার মেনেই নিয়েছে এই এলাকার বাসিন্দারা। 


মার্চ মাস পড়তে না পড়তেই উত্তুঙ্গ তাপমাত্রা। আর সেই সঙ্গে জলের সমস্যা শুরু হেমতাবাদে।  বাঙালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এর দক্ষিণ কোঠাগাও, নুরপুর, শাসন, কমলপুর, ধোয়ারই, ইসলামপুর সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষদের মাথায় হাত পড়ে যায় পানীয় জলটুকু জোগাড় করতেই। বাঙালবাড়ি এলাকার মানুষদের পানীয় জল পেতে বাড়ি থেকে যেতে হয় প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। 


বাড়িতে নলকূপ থাকলেও সেগুলো থেকে পড়ে না জল। এই কষ্টটা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে গরম বাড়লেই। পুকুরের জল দিয়েই চালিয়ে নিতে হয় সব কাজ। যদিও পুকুরের জন খাওয়া মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়।  দু একটি গভীর নলকূপ থাকলেও তবে তা প্রয়োজনের থেকে অনেক কম সংখ্যক। 


প্রতিবারের মতো এবারও পানীয় জল না পাওয়ায়  প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা। পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। এলাকায় জলের পাইপ লাইন পৌঁছলেও জল এখনও কেন জল পৌঁছয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন স্থানীয়দের।


বারবার স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। বাঙালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান যদিও দায় ঝেড়ে ফেলছেন, বিষয়টি জানা নেই বলে! তবে সমাধানের চেষ্টা করবেন আশ্বাসও দিয়েছেন। অন্যদিকে, হেমতাবাদের বিডিও সুদীপ পাল সংশ্লিষ্ট দফতরকে অতি দ্রুত বিষয়টি সামাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান। 


আখতারা বেগম নামের এক স্থানীয় মহিলা জানান, জলের অভাবে রান্নার কাজও ঠিক মত করা যায় না গরমে। পিএইচই-র জল পরিষেবাও একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। বাড়ির টিউবয়েলগুলি থেকে একগ্লাস জলও বের হয় না। পুকুরের জল দিয়ে স্নান ও গৃহস্থালির অন্যান্য কাজ করতে হচ্ছে। পানীয় জলের জন্য জমিতে বসানো সাব মারসিবল পাম্পই ভরসা। রোজার ( উপবাস ) মধ্যেই দুর থেকে মাথায় করে জল আনতে হচ্ছে।


আরেক স্থানীয় মনোয়রা বেগম  জানান, পিএইচই-র কলগুলি দীর্ঘদিন থেকে বিকল। এক ফোঁটা জলও পড়ে না। টিউবয়েলগুলিরও একই অবস্থা। ৫০০ মিটার দুর থেকে মহিলাদের জল বয়ে আনতে হচ্ছে। এখনই এই অবস্থা হলে গরমের এখনও আরও অনেক দিন পরেই আছে। প্রধান, পঞ্চায়েতের সদস্যকে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি।


যদিও বাঙালবাড়ি পঞ্চায়েত প্রধান লায়লা আনজুমান বানুর দাবি, পাইপলাইন এর কাজ শেষ হয়ে গেছে। দু-একদিনের মধ্যে কানেকশন হয়ে যাবে। তারপর এলাকার বাসিন্দাদের জল কষ্টের সম্মুখীন হতে হবে না। পাশাপাশি তিনি আরও জানান, পঞ্চায়েতের জল সরবরাহকারী ট্যাঙ্ক থেকে তাদের জল দেওয়া হবে এবং তিনি নিজে গিয়ে এলাকা পরিদর্শন করবেন। অন্যদিকে, হেমতাবাদের বিডিও সুদীপ পাল সংশ্লিষ্ট দফতরকে অতিদ্রুত বিষয়টি সামাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। 


আরও পড়ুন :


নন্দীগ্রামে পা-ভাঙা থেকে মাথার গভীর ক্ষত, একের পর এক চোটে জর্জরিত মুখ্যমন্ত্রী