কলকাতা: এখনও সঙ্কটজনক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharya Health Update)। ১০০ শতাংশ ভেন্টিলেশন সাপোর্টে রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহল তো বটেই রাজ্যবাসীর প্রার্থনা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা। আর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্র করেই, কুণাল ঘোষের এক বিতর্কিত মন্তব্য। যা ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠল। কুণাল ঘোষের 'মহাপুরুষ' কটাক্ষের সমালোচনা করেছে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপিও।
তিনি রোগসজ্জায়, রয়েছেন ভেন্টিলেশনে। তাঁকে ঘিরে এখন শুধুই হাজারো চিকিৎসা সরঞ্জামের আওয়াজ। আর লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রার্থনা, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন তিনি। কিন্তু সেই তাঁকে কেন্দ্র করেই, কুণাল ঘোষের এক বিতর্কিত মন্তব্য ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠল। অসুস্থ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে 'মহাপুরুষ' কটাক্ষ কুণালের। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ভর্তি হওয়ার পর থেকেই সিপিএমের পাশাপাশি হাসপাতালে দেখা গেছে রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে। গেছেন আইএসএফের বিধায়কও। তবে, দেখা যায়নি তৃণমূলের কোনও নেতাকে। এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ ফেসবুকে লেখেন, “বুদ্ধবাবুর আরোগ্য আমিও চাই, উনি সুস্থ থাকুন। কিন্তু দয়া করে আদিখ্য়েতার পোস্টে ওঁকে মহাপুরুষ বানাবেন না। উনি সিপিএম আর ওঁর ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভুলে বহু ক্ষতি হয়েছে।’’
কী বললেন কুণাল ঘোষ?
এপ্রসঙ্গে এদিন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেন “দ্রুত আরোগ্য কামনার সঙ্গে যারা আদিখ্যাতা করে তাঁকে মহাপুরুষ সাজাচ্ছেন তার সঙ্গে একমত নই। কারণ, বুদ্ধদেব বাবুর জমানায় সিপিএম বহু খারাপ কাজ করেছে। এবং বুদ্ধদেববাবুর ঔদ্ধত্য এবং ভুল সিদ্ধান্তে বহু ক্ষতি হয়েছে। এই মুহুর্তে দেখতে যাওয়া, না যাওয়া, আমার মনেহয় দেখতে গিয়ে খুব কার্যকরী কাজ সেখানে হবে না। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত খোঁজখবর রাখছেন। দায়িত্বশীল অভিভাবিকার মতো খোঁজখবর রাখছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের।’’
কুণাল ঘোষের মন্তব্যে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “পিপীলিকা যদি মনে করে পাখি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোন গুনের জন্য় ওঁকে নেতা করেছেন?’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “রাজনৈতিক ছোটলোক বলে নতুন শব্দ অভিধানে আনতে হবে। এমন মুখপাত্রকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া উচিত।’’সিপিএম, কংগ্রেসের সঙ্গে একযোগে কুণাল ঘোষের 'মহাপুরুষ' কটাক্ষের সমালোচনা করেছে বিজেপিও। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "বুদ্ধবাবুর দিকে আঙুল তুলে কেউ চোর বলতে পারবেন না। তাঁর আরোগ্য কামনা করলে কারও যদি আদিখ্যেতা মনে হয়, তাহলে সেটা তাঁর রুচির বিষয়।''
কুণালের গলায় যখন কটাক্ষের সুর, তখন সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা বলছেন তাঁরই দলীয় সতীর্থ মদন মিত্র। কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, “শ্রদ্ধা করি ওঁকে। এ সমাজে শিরদাঁড়া ভাড়া পাওয়া যায় না। বিরল রাজনীতিবিদ। ওনার আমলে কিছু সমস্য়া হলেও উনি ভাল। এখন যাঁরা রাজনীতিতে আসছে তাঁদের মডেল, এ সমাজে হায় সবকিছু ভাই পাওয়া যায় ভাড়া/শুধু সোজা নির্ভীক শিরদাঁড়া ছাড়া।’’