গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বাংলা বছরের প্রথম দিনেই ফের অঙ্গদানের (Organ Donation) অঙ্গীকার রাজ্যে (West Bengal)। গত কাল বিকেলে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital) দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির (Kulpi) পশ্চিম গোপালনগরের বাসিন্দা ৩৮ বছরের বিদেশ হালদারের 'ব্রেন ডেথ' ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এই ঘোষণার পরেই বিদেশের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের সম্মত্তি মেলার পর এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অঙ্গদানের প্রক্রিয়াও শুরু করেন।
যা জানা গেল...
প্রশাসন সূত্রে খবর, ৩৮ বছরের ওই যুবক কুলপি থানার সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন। গত ৭ এপ্রিল বাড়ি থেকে সাইকেলে চেপে কুলপি যাচ্ছিলেন তিনি। আচমকাই ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে পথদুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন বিদেশ। ওই দিনই তাঁকে কলকাতার এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসায় খুব বেশি উন্নতি হয়নি। গত কাল বিকেলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁর 'ব্রেন ডেথ' ঘোষণা করেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, খুবই দরিদ্র পরিবারের ছেলে বিদেশ। এক সন্তানও রয়েছে তাঁর। কিন্তু 'ব্রেন ডেথ' ঘোষণা হতেই যে ভাবে তাঁর পরিবারের সদস্যরা অঙ্গদানের অঙ্গীকার করে একাধিক মানুষের প্রাণ বাঁচানোর পথ খুলে দিয়েছেন, তাতে অভিভূত চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকে। বিদেশ হালদারের এই ঘটনা অনেককেই সোনাখালির নীলশেখর মণ্ডলের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
হালেই এক ঘটনা...
হালে কার্যত একই ভাবে ছ'জনকে নতুন জীবন দিয়ে গিয়েছিলেন সোনাখালির তরুণ নীলশেখর মণ্ডল। মরণোত্তর অঙ্গদান করে শরীরে একাধিক অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। শহরে এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক অঙ্গদানের নজির। সম্প্রতি পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন তরুণ। তার পর, গত ২ এপ্রিল থেকে অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন। শেষ মেশ সব লড়াই ব্যর্থ হয়ে যায় ওই তরুণের। ৭ এপ্রিল তাঁকে 'ব্রেন ডেথ' বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু নিজে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেও, একাধিক মানুষকে নতুন জীবন দান করে গেলেন নীলশেখর। মরণোত্তর অঙ্গদান করেন নীলশেখর। তবে একটি বা দু'টি নয়, তাঁর শরীরে একাধিক অঙ্গ অন্যকে আলোয় ফিরতে সাহায্য করছে। কারণ যকৃৎ, বৃক্ক, হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, চোখ, ত্বক এমনকি ক্ষুদ্রান্তও দান করে গিয়েছেন নীলাদ্রি। অন্য় রোগীর শরীরে তা প্রতিস্থাপন হতে চলেছে। এই প্রথম কলকাতায় একজনের থেকে একসঙ্গে এতগুলি অঙ্গ সংগ্রহের ঘটনা ঘটল।
আরও পড়ুন:'মনটা খারাপ, কেষ্ট দা-কে মিস করছি', বীরভূমের সভা থেকে বললেন সোহম