সৌমেন চক্রবর্তী, ছোট আঙারিয়া : রামপুরহাটকাণ্ড (Rampurhat Massacre) উসকে দিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতার (Garbeta) ছোট আঙারিয়ার (Choto Angaria) ঘটনার স্মৃতি। ২১ বছরেরও বেশি আগে তৃণমূল কর্মী বক্তার মণ্ডলের বাড়িতে বোমা ছুড়ে, আগুন লাগিয়ে ৫ জনকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। বাম জমানার ওই ঘটনায় তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। রামপুরহাটকাণ্ডের রেশ ধরে আবার তা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা।
রামপুরহাটের ঘটনা মনে করিয়ে দিল ২১ বছর আগের একদিন। বগটুইকাণ্ডের জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ছোট আঙারিয়ার ঘটনা স্মৃতিতে ফিরতেই নানা মহলে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে।
২০০১ সালের ৪ঠা জানুয়ারি। গড়বেতার ছোট আঙারিয়া গ্রামে সন্ধেয়, বক্তার মণ্ডল নামে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ঘিরে ফেলে, বোমা-গুলি ছুড়ে, কুপিয়ে, আগুন জ্বালিয়ে ৫ জনকে নৃশংস ভাবে খুনের অভিযোগ ওঠে। ছোট আঙারিয়ার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মহব্বত মণ্ডল বলেন, "গ্রামের অনেকে ঘরছাড়া ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১১ জনকে নিয়ে বৈঠক হচ্ছিল। সিপিএমের হার্মাদরা বোমা ছুড়ে বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। গুলিও করেছিল। আমরা পালাতে পেরেছিলাম। কয়েকজন পালাতে পারেননি। বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। বডি পাওয়া যায়নি। দেহ আর দাঁত পাওয়া গিয়েছে। রামপুরহাটের ঘটনাও মনে হচ্ছে একই রকম।"
আরও পড়ুন ; আজ বগটুই গ্রামে যাচ্ছে বিজেপির কেন্দ্রীয় দল
ছোট আঙারিয়ার ঘটনার অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুল শেখ বলেন, "খবর পেয়ে গিয়ে দেখি বাড়ি দাউদাউ করে জ্বলছে। বাঁশ গাছের আড়াল থেকে ৫টা মৃতদেহ দেখেছিলাম। পরে বডিগুলোও সরিয়ে দেওয়া হয়।"
রামপুরহাটে একই বাড়ি থেকে ৮ জনের দগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ফের উঠেছে হত্যালীলার অভিযোগ। ছোট আঙারিয়ার ৫ জন তৃণমূল কর্মীকে খুনের পর দেহ লোপাট করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে তদন্তে উদ্ধার হয় খুলি, দাঁত ও কার্তুজ।
রামপুরহাটকাণ্ডে স্মৃতিতে ছোট আঙারিয়া নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা । বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি সমিতকুমার মণ্ডল বলেন, নেতাই, ছোট আঙারিয়ার প্রতিফলন রামপুরহাটে। সিপিএম আর তৃণমূল মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। তাদের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কী আশা করা যাবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত্ ঘোষ বলেন, ছোট আঙারিয়া ও রামপুরহাট সম্পূর্ণ আলাদা ঘটনা। ওই সময় সিপিএম অনেক জায়গায় এমন কাজ করেছিল। তা নিয়ে মামলা চলছে। আর বিজেপি যে লাফালাফি করছে তখন তাদের অস্তিত্বই ছিল না।