মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান: দুর্গাপুরে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের বটলিং প্লান্টে তোলাবাজির অভিযোগ। টাকা না দেওয়ায় গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনই অভিযোগ পরিবহণ ব্যবসায়ীদের একাংশের। কাটমানির বখরা নিয়ে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই এই সমস্যা। বিরোধীদের নিশানায় তৃণমূল। বদনামের জন্যই এমন কাজ, পাল্টা অভিযোগ তৃণমূলের।


কী অভিযোগ?
কারখানার বাইরে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের গাড়ি। অভিযোগ, তোলার টাকা না দেওয়ায় এই গাড়িগুলিকে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরে ইন্ডিয়ান অয়েলের বটলিং প্লান্টে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে শহরে রান্নার গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার বটলিং প্লান্টে ঢোকার জন্য কারা তোলা চাইছে? স্থানীয় পরিবহণ ব্যবসায়ীদের একাংশের ইঙ্গিত রাজ্যের শাসকদলের দিকে। দুর্গাপুরের পরিবহণ ব্যবসায়ী হরিহর যাদব বলেন, 'গাড়ি আটকে দিচ্ছে। একটাই দাবি টাকা দিতে হবে। রাজ্যে তো একটাই পার্টি। তাদের টাকা দিতে পারলেই সব ঠিক থাকবে।'


বিরোধীদের নিশানায় তৃণমূল:
এমন ঘটনায় রাজ্যের শাসকদলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলছে বিরোধীরা। দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, 'টাকার ভাগ নিয়ে তৃণমূলের আসানসোল লবি আর দুর্গাপুর লবির লড়াই। অচলাবস্থা জারি থাকলে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে চিঠি দিয়ে কড়া পদক্ষেপের আর্জি জানাব।' পশ্চিম বর্ধমানে সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, 'গাড়ি আটকে দিচ্ছে। ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।'


তৃণমূলের দাবি:
স্থানীয় সূত্রে খবর, দুর্গাপুর ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্লান্টে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন, দুর্গাপুর পশ্চিমের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক ও প্রাক্তন INTTUC জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের অনুগামীদের দখলে রয়েছে। তোলাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের দাবি, পুরোটাই তাঁকে বদনাম করার চেষ্টা। তিনি বলেন, 'বিরোধীরা রাজনৈতিকভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আরও কেউ কেউ রয়েছে। শ্রমিক স্বার্থে লড়ছি। বটলিং প্লান্টে শ্রমিকদের বেতন আগের চেয়ে প্রায় ৪০০ টাকা কমিয়ে দিয়েছে। তারে জেরে এই অচলাবস্থা।'


বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে দুর্গাপুর ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্লান্ট কর্তৃপক্ষ। সংস্থার কমার্সিয়াল ম্যানেজারকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।  


আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে এফসিআই গোডাউনে লরি মালিকদের ‘সিন্ডিকেট-দৌরাত্ম্য’, বিপাকে রেশন ডিলাররা