কৌশিক গাঁতাইত, পশ্চিম বর্ধমান: পুনর্বাসন প্রকল্পে (Rehabilitation Scheme) ঘর দেওয়া হবে। কানে কানে রটে গিয়েছিল সর্বত্র। তাতেই হুলস্থুল কাণ্ড আসানসোল (Asansol News) পুরসভা চত্বরে। খবর কানে যেতেই পুরসভা চত্বরে ভিড় জমালেন কাতারে কাতারে মানুষ। যদিও পুরসভার থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এরকম কোনও প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়নি। তবে শেষমেশ আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়েছে, যা নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা (Paschim Bardhaman News)।


হুলস্থুল কাণ্ড আসানসোলে


যাঁরা দারিদ্রসীমার নীচে রয়েছেন, তাঁদের পুনর্বাসন প্রকল্পে ঘর দেওয়া দেওয়া হবে, এই মর্মে খবর চাউর হতেই, বৃহস্পতিবার সকালে দলে দলে মানুষ জন আসানসোল পুরসভায় ভিড় জমান আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে। 


কিন্তু পুরসভায় এসে তাঁরা জানতে পারেন, ঘর দেওয়ার কোনও ঘোষণা করা হয়নি। ফলে আবেদনপত্র দেওয়ারও প্রশ্ন নেই। এই কথা জানার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন সকলে। ঘরের দাবিতে, পুরসভার ভিতরেও ঢুকে পড়েন তাঁরা। তাতে চরম অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। 


স্থানীয় বাসিন্দা শেহনাজ খাতুন বলেন, "আমরা শুনলাম ফর্ম দিচ্ছে। এখন এসে শুনছি, কোনও ফর্ম নেই।" পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এর পর ঘরের দাবিতে আসা সকলকে সাদা কাগজে আবেদনপত্র জমা দিতে বলা হয় পুরসভার তরফে। তার জন্য একটি বাক্সেরও ব্যবস্থা করা হয়। 


স্থানীয় বাসিন্দা রেশমা খাতুন বলেন, "শেষে সাদা কাগজে আবেদনপত্র লিখে দিতে বলল। লিখে দিলাম, কিন্তু কোনও রিসিভ কপি দিল না।"


আরও পড়ুন: Paresh Adhikari: বাম আমলে নিয়ম ভেঙে খাদ্য দফতরে নিয়োগের অভিযোগ! পরেশকে গ্রেফতারের দাবি তৃণমূল নেতার


তৃণমূল পরিচালিত আসানসোল পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন কারণে যাঁরা ঘর হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্পে ৬০০টি ঘর বরাদ্দ রয়েছে, যে ঘর পেতে আগেই আবেদনপত্র জমা পড়েছে।


ফলে এদিন যাঁরা নতুন করে ঘরের দাবি তুলেছেন, তাঁদের ঘর দেওয়া নিয়ে চিন্তায় পড়েছে পুরসভা। যদিও সাধারণ মানুষের হয়রানির জন্য পুরসভাকেই নিশানা করেছে বিজেপি। পাল্টা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।


আসানসোন পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর ওয়াসিমুল হক বলেন, "ঘর দেওয়া সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও ফর্ম দেওয়া হয়নি। কিছু মানুষ নিজে থেকেই আবেদনপত্র জমা করে গিয়েছেন। আজ হাজার খানেক মানুষ চলে এসেছেন। এটা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র। তাঁরা চাইছেন না পুরসভা সুষ্ঠু ভাবে চলুক।"


গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক তরজা


কিন্তু আসানসোল পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর ও বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি তিওয়ারি বলেন, "নিজেরা এসি ঘরে বসে আছেন, আর গরিবরা ঘর পাচ্ছেন না। ওঁদের ভোটেই জিতেছে এরা।" কিন্তু পুনর্বাসন প্রকল্পে বরাদ্দ ঘরের সব আবেদনপত্র যেখানে জমা পড়ে গিয়েছে, সেখানে নতুনদের ঘর দেওয়া হবে কীভাবে, উত্তর নেই।